যশোরের হামিদপুর গ্রামে বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা সাজানো বলে দাবি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন। তিনি বলেছেন, ওইদিন এ কাজে ঘটনাস্থলে থাকা তো দুরের কথা, শহরের চৌরাস্তা এলাকা পার হয়েছেন এমন প্রমাণ যদি কোনো সাংবাদিক দিতে পারেন তাকে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে। একইসাথে ছেলে সামির ইসলাম পিয়াস ওইদিন ঘটনাস্থল এলাকায় ছিলেন এমন প্রমাণ করতে পারলে আরো ১৫ লাখ টাকা পুরস্কার দেবেন। এছাড়া প্রতিপক্ষ আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থলের জমি ও বাড়ির এক শতকেরও যদি কাগজপত্র দেখাতে পারেন, সেখানেও ১০ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন শহিদুল ইসলাম মিলন।
তিনি আরো বলেন, আসাদুজ্জামান গং নিজেরা এস্কেভেটর এনে বাড়ি ভাঙচুর করে নানা কল্পকাহিনী সাজিয়ে তাকে ও তার ছেলে পিয়াসের নাম জড়িয়ে মিথ্যাচার করছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ পুরস্কার ঘোষণা করেন। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের নেতা এএসএম হুমায়ূন কবীর কবু, অধ্যক্ষ হারুণ অর রশিদ, ফিরোজ খান ও বিরোধীয় সম্পত্তির প্রকৃত মালিক নুর মোহাম্মদ, নূরুল ইসলাম মাস্টারসহ জেলা আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শহিদুল ইসলাম বলেন, কার্যত তিনি ওই জমির কোনো পার্ট নন। তার আত্মীয় নূরুল ইসলাম ও নুর হোহাম্মদ ওই জমির প্রকৃত মালিক এবং তারা খাজনা ট্যাক্স দিয়ে চলেছেন। আর আসাদুজ্জামান ভূমিদস্য। বয়বৃদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম মাস্টার ও নুর মোহাম্মদের পরিবারের লোকজনকে হেনস্তা করে ভয়ভীতি দেখিয়ে দীর্ঘদিন জবর দখলে আছে। ঘটনার ব্যাপারে তার ও তার ছেলের নাম জড়িয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় এমকি থানায় পর্যন্ত অভিযোগ করা হয়েছে। মিথ্যাচারের একটি শেষ থাকে। আসাদুজ্জামান পরিবারের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান এটা ভুয়া। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য কিংবা সন্তান জুড়ে দিয়ে চরম মিথ্যাচার করা হচ্ছে। এ নিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হচ্ছে। সম্প্রতি যশোরের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ওই সম্পত্তি থেকে আসাদুজ্জামান গংকে উচ্ছেদ করে নূরুল ইসলাম ও নুর মোহাম্মদকে দখল বুঝিয়ে দেয়ার ব্যাপারে বিবৃতিও দিয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আরো বলেন, তাকে ও তার ছেলেকে নিয়ে নানা তথ্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তার বাড়িতে এক সময় আসাদুজ্জমানের পরিবারের সদস্যরা বাজার করে দিয়েছেন, এমন অসত্য তথ্য প্রচার হচ্ছে যা একেবারে হাস্যকর। তিনি বলেন, নুরুল ইসলাম মাস্টার ৮৬ নং হামিদপুর মৌজায় ২৪৫ এর ১৬১৯ এবং ১৬২০ দাগের ২ একর ৯৭ শতক জমি বন্ধকী রেখে বিডিবিএল থেকে ঋণ গ্রহণ করেন। বন্ধকীকৃত ২ একর ৯৭ শতক জমি ছাড়াও হামিদপুর মৌজায় নুরুল ইসলাম ও তার নিকটজন নুর মোহাম্মাদের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ বিঘা জমি রয়েছে। ব্যাংকে বন্ধকী রাখা ওই ২ একর ৯৭ শতক জমি নিলামে কেনেন আসাদুজ্জামান। কিন্তু ভূমি দস্যু আসাদুজ্জামান ব্যাংক থেকে কেনা জমি ছাড়া ও নুর মোহাম্মদের জায়গা জবরদখল করে রেখেছেন। উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতের সকল পর্যায়ে রায় তার পক্ষে থাকা সত্ত্বে আসাদুজ্জামান ওই জায়গা জোর করে অবৈধভাবে দখল করে আছেন। তার জায়গায় নির্মিত বাড়িটি আইন বহির্ভূতভাবে করা হয়েছে। যার কোনো বৈধ কাগজপত্র তার নেই। যদি ওই অংশের কোনো কাগজপত্র আসাদুজ্জামানের কাছে আছে এমন প্রমাণ কোনো সাংবাদিক করতে পারেন তার জন্য ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন শহীদুল ইসলাম মিলন। একই সাথে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা সব সাজানো। নিজেরাই ভেঙে পরে পুলিশে খবর দেন আসাদুজজামান চক্র। ওই ঘটনায় তাকে এবং তার ছেলে পিয়াসকে জড়িয়ে বিভিন্ন পত্রিকা ও থানায় অভিযোগ করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি আারো বলেন, আসাদুজজ্জান চক্র সংবাদ সম্মেলনে ও অভিযোগে ক্ষয়ক্ষতির যে হিসেব দিয়েছে তা একবারে হাস্যকর ও মনগড়া। যার কোনো প্রমাণ নেই ওই চক্রের হাতে।
খুলনা গেজেট/এএজে