যশোরে ভ্যাকসিন প্রদান উৎসব পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাক্তার মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এসময় তিনি ভ্যাকসিন উৎসব দেখে অভিভূত হয়ে পড়েন। বুধবার দুপুরে তিনি যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। তার সাথে ছিলেন অধিদপ্তরের লাইন ডাইরেক্টর (এনসিডি) অধ্যাপক ডাক্তার রোবেদ আমিনসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন ও যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার দিলীপ কুমার রায়ের কাছ থেকে পরিদর্শন টিমের সদস্যরা করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন (টিকা) প্রদান উৎসবের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন। এরপর তারা কেন্দ্রগুলো পরিদর্শনসহ ভ্যাকসিন প্রদানকারী স্বাস্থ্যসেবী ও গ্রহীতাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের চক্ষুরোগ চিকিৎসা বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তার হিমাদ্রী শেখর সরকার, হৃদরোগ চিকিৎসা বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তার তৌহিদুল ইসলাম, হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসারা ডাক্তার আরিফ আহমেদ, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মীর আবু মাউদ, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার রেহনেওয়াজ রনি প্রমূখ।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে অধ্যাপক ডাক্তার মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, করোনা মহামারি প্রতিরোধে ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য সরকার সবধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সারাদেশে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে। যশোরে উৎসবমূখর পরিবেশে মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করছেন। এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। সব ধরণের শংঙ্কাকে পাশ কাটিয়ে সবাইকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা উচিত। মানুষকে সচেতন করার জন্যে তিনি সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যম বিশেষ ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
ডাক্তার ফ্লোরা বলেন, ভ্যাকসিন গ্রহণকারী শুধু নিজেকে নিরাপদ রাখলেন বিষয়টি সেরকম নয়। মূলত তিনি দেশকে নিরাপদ করলেন। করোনা মহামারি থেকে দেশকে বাঁচাতে ভ্যাকসিন গ্রহণের বিকল্প নেই। তবে সতর্কতা সব সময় বজায় রাখতে হবে। ভ্যাকসিন গ্রহণের পরই মাক্স খুলে ঘুরলে হবে না। মাক্স অবশ্যই পরতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম চলমান থাকবে। এটি বন্ধ হওয়ার কোনো আশংকা নেই। তাই প্রত্যেকে নিজ দায়িত্বে অনলাইন নিবন্ধন সম্পন্ন করে কেন্দ্রে এসে ভ্যাকসিন গ্রহণের পাশাপাশি অন্যদেরও উৎসাহ দিতে হবে।
যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে অধ্যাপক ডাক্তার মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার নেতৃত্বাধীন টিম মণিরামপুর উপেজলার রামনগর কমিউনিটি ক্লিনিক ও কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। প্রতিষ্ঠান দু’টির স্বাস্থ্যসেবী ও চিকিৎসা প্রার্থীদের সাথে তারা মতবিনিময় করেন।
এদিকে, যশোরে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমের বিষয়ে সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন জানান, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪৩ হাজার দু’জন অনলাইন নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ৪শ’ ৯৭জনকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ১৯ হাজার ৪শ’ ৮৭ জন পুরুষ ও ৯ হাজার ১০ জন নারী রয়েছেন।
বুধবারই ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৪ হাজার ৩শ’ ৫৮জন। যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছেন এক হাজার ৭শ’ ৬জন। তাদের মধ্যে এক হাজার ৩০জন পুরুষ ও ৬শ’ ৭৬ নারী রয়েছেন। পুলিশ হাসপাতাল থেকে দু’শ ৮৩ জন পুরুষ ও ৫৭ জন নারী, বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান মেডিকেল স্কোয়াড্রনে ৩৯জন পুরুষ ও ৬জন নারী, যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে একশ’ ৩৬ জন পুরুষ ও ১৭জন নারী ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন।
এছাড়াও অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুরুষ দুশ’ ৩৬, নারী একশ’ ৩৪জন, বাঘারপাড়ায় পুরুষ ৯৩, নারী ৪৯জন, চৌগাছায় পুরুষ একশ’ ৩৪, নারী ৭৪জন, ঝিকরগাছায় পুরুষ দুশ’ ৩৫, নারী একশ’ ৩৮জন, কেশবপুরে পুরুষ একশ’ ১০, নারী ৯০জন, মণিরামপুরে পুরুষ তিনশ’ ৮৭, নারী একশ’ ৩৮ জন ও শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুরুষ দুশ’ ১৪, নারী ৮৬ জনকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।