যশোরে ইউসিবিএল ব্যাংকের সামনে ফিল্মি স্টাইলে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাই মামলার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। এক নারী ও মিশনের ৮ সদস্যসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন যশোর সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর তুষার কান্তি মন্ডল। ছিনতাইকৃত বেশিরভাগ টাকা উদ্ধার হয়েছে এবং ডাকাতির সাড়ে ৫ লাখ টাকা দখলে রাখা জামাই রাজ্জাককে পলাতক দেখানো হয়েছে।
২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংকের নিচে শ’ শ’ মানুষের সামনে ছুরিকাঘাত করে ও বোমা ফাটিয়ে আরএন রোডের আগমনী মোটর্সের ১৭ লাখ টাকা ছিনতাই হয়। ৮/৯ জনের উঠতি দুর্বৃত্ত চক্র বকচরের হাবিবুর রহমান কুটি মিয়ার ছেলে টাকা বহনকারী এনামুল হককে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে টাকা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে গোহাটা রোড দিয়ে পালিয়ে যায়।
ব্যাংকের সিসি টিভি ফুটেজ থেকে ছিনতাই, বোমাবাজি ও ছুরিকাঘাতের দৃশ্য দেখে তাৎক্ষনিক অভিযানে নামে পুলিশ। শতাধিক পুলিশ অফিসার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও আটকে অভিযান শুরু করেন। এক সপ্তাহের মধ্যে পুলিশ একে একে ৮জনকে আটক করে। দীর্ঘ তিন মাস তদন্ত শেষে এ চাঞ্চল্যকর মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে আদালতে।
অভিযুক্ত করা হয়েছে, মামলার প্রধান আসামি ডাকাতি মিশনের নায়ক বারান্দীপাড়ার মোস্টওয়ান্টেড ইয়াসির আরাফাত রাজু, তার মা মেহেরুন্নেছা বেগম, পুলিশ লাইন টালিখোলার শফি দারোগার বাড়ির ভাড়াটিয়া মুনছুর মোল্লার ছেলে টিপু, বারান্দী মোল্লাপাড়ার রবিউল ইসলাম রিকসাওয়ালার ছেলে সাঈদ ইসলাম শুভ, ধর্মতলা হাচারিপাড়ার রুহুল আমীনের ছেলে বিল্লাল হোসেন ওরফে ভাগ্নে বিল্লাল, সিটি কলেজপাড়া ব্যাটারি পট্টির নিজাম উদ্দিনের ছেলে রায়হান, পূর্ববারান্দী মালোপাড়ার মৃত মুফতি আলী হুসাইনের ছেলে ইমদাদুল হক, একই এলাকার সোহেল শেখ ও পলাতক আব্দুর রাজ্জাক ওরফে জামাই রাজ্জাক।
তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর তুষার কান্তি মন্ডল বলেন, ‘স্বচ্ছতার সাথে মামলার তদন্ত কার্যক্রম চালানো হয়েছে। যশোর সদর ফাঁড়ি পুলিশকে আটক অভিযান ও তদন্তে বিভিন্ন ইউনিট সহায়তা করেছে । অভিযান চলেছে যশোর জেলার বিভিন্ন স্পট, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলায়। তদন্তে উঠে এসেছে আটক এড়িয়ে চলা জামাই রাজ্জাকের কাছে তার ভাগের এক লাখ টাকা ছাড়াও আরো কয়েকজনের ভাগের সাড়ে ৪ লাখ টাকা মিলিয়ে সাড়ে ৫ লাখ টাকা রয়েছে। তার বাড়ি বরিশালে। সে যশোরের বারান্দী মোল্লাপাড়া কবরস্থান এলাকার আব্দুল হাইয়ের মেয়েকে বিয়ে করে ঘরজামাই থাকতো। এছাড়া যশোর শহরের গাড়িখানা এলাকায় ভ্যানে ফল ও কাপড় বিক্রি করতো। তাকে আটকে কয়েক দফা মোবাইল ট্রাকিং করা হয়েছে। বার বার অবস্থান পাল্টাচ্ছে সে। যে কারণে পুলিশের কয়েকটি অভিযানও ব্যর্থ হয়েছে। লুণ্ঠিত টাকার মধ্যে সর্বমোট ৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫শ’ টাকা উদ্ধার হয়েছে। ৯ অভিযুক্তের মধ্যে ৮ জন পাকড়াও হয়েছে। আর আটক এড়িয়ে চলা এ মামলার জামাই রাজ্জাক দ্রুত সময়ে আটকের আওতায় আসবে। বাকি টাকাও উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।
খুলনা গেজেট / এমএম