যশোরে যুবদল নেতা বদিউজ্জামান ধনী হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড বিএনপি নেতা শামীম আহম্মেদ মানুয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আত্মসমর্পণের পর পুলিশ মানুয়াকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানায়। মঙ্গলবার পুলিশের চাওয়া সাতদিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম একদিন মঞ্জুর করেন। শামীম আহম্মেদ মানুয়া যশোর শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে।
গত ১২ জুলাই যুবদল নেতা বদিউজ্জামান ধনীকে চোপদারপাড়ার আকবর মোড়ের বাড়ির সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় ধনীর ভাই মনিরুজ্জামান মনি বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে মামলা করেন।
আদালত ও পুলিশ সূত্র জানায়, এ মামলার দু’ আসামি আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে জানিয়েছেন মানুয়ার নির্দেশেই হত্যা করা হয়েছে ধনীকে। তার মধ্যে রয়েছেন মানুয়ার আপন ভাগ্নে রায়হান মুন্সী। রায়হান জানিয়েছেন, মানুয়ার জামাই আরেক সন্ত্রাসী ইয়াসিন হত্যার পর থেকে ধনীকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এরপর গত ৮ জুলাই রায়হান ও আকাশ নামে দু’জনকে ডাকেন মানুয়া। পরে তিনি ধনীকে হত্যার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী, ঘটনার দিন মানুয়া রায়হানকে ফোন করে জানান, ধনী বাড়ির সামনে ফার্মেসিতে রয়েছেন। এরপর রায়হান আকাশ, মন্টু ও ইছাসহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে গিয়ে ধনীকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যান। আরেক আসামিও একই কথা বলেন আদালতে।
এদিকে, মামলার পর থেকেই গা ঢাকা দেন মানুয়া। পরে তিনি উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নেন। জামিন নিয়ে বাদীর পরিবারকে নানা ধরনের হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। বাধ্য হয়ে বাদীর পরিবার থানায় জিডি করে। সর্বশেষ, গত ৩ অক্টোবর আটক এড়িয়ে যশোরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মানুয়া। সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক মানুয়ার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বিষয়টি পুলিশ জানতে পেরে কারাগারে আটক মানুয়ার সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানান। আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই আনসারুল হক জানান, এ মামলায় আট আসামির মধ্যে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের স্বীকারোক্তিতে উঠে এসেছে এ হত্যার মাস্টারমাইন্ড মানুয়া। এর সাথে জড়িত কয়েকজন এখনো অধরা রয়েছে। তাদেরকে আটক ও হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার, উদ্ধারকৃত অস্ত্রের উৎস এবং হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য মানুয়ার সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা আনসারুল হক।