মণিরামপুরের একটি বাড়িতে মানুষের বসবাস নাকি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি মৌ-মাছিদের দখলে। প্রথম পর্যায় এমন প্রশ্ন দূরের অপরিচিত মানুষের মাঝে ঘুরপাক খেতেই হবে। একটু দূর থেকে যে কারো চোখে পড়লে মনে হবে মধু আহরনে বসতবাড়িতে বিশাল মৌমাছির চাষ করা হয়েছে। বসতবাড়ির চতুরদিকে মৌ চাক দেখে এমন প্রশ্ন জাগাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কাছে যেতেই নিজে হতবাক হতে হবে।
চাষের জন্য নয়, প্রাকৃতিকভাবেই বাড়ির দেওয়ালের চারিপাশে ছোট-বড় প্রায় ১শ’ মৌমাছি চাক বেঁধেছে। যে কারনে বাড়িটি মৌমাছি বাড়ি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
জানাযায়, রেকর্ড পরিমান মৌমাছি বিশিষ্ট বাড়িটির মালিক উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাকোশপোল গ্রামের ইমান আলী বিশ্বাসের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য হাবিবুর রহমান। বাড়িটি অবস্থিত গ্রাম সংলগ্ন বাকোশপোল বাজারে।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য হাবিবুর রহমান জানান, তিনি পরিবার নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করেন। গত ৫ বছর ধরে তার বসতবাড়ির বাইরের দেওয়ালের চারিপাশে মৌমাছি চাক বেঁধে আছে। শুধু বসতবাড়ির দেওয়ালে নয়, জানালার কার্নিশ,এমনকি বাড়ি লাগোয়া আম ও নারিকেল গাছেও মৌমাছিরা চাক বেঁধেছে। তবে, বছরের সব সময় থাকে না। বর্ষাকাল এলেই চলে যায়। আবার খেজুর গুড়ের মৌসুমে চলে আসে।
বাড়ির মালিক আরও জানান, প্রায় শতাধিক মৌমাছির চাক থেকে তিনি বছরে কয়েক মন মধু পেলেও তা বিক্রি করেন না। আত্বীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশিদের মধ্যে ওই মধু বিলিয়ে দেন।
অপর এক প্রশের জবাবে তিনি বলেন, প্রথম দিকে ঘরে মৌমাছির জন্য বেশ যন্ত্রনা পোহাতে হয়েছে। প্রতিবেশীদের বাড়িতে মৌমাছি উড়ে গিয়ে জ্বালাতন করতো। প্রথম পর্যায় অনেকে মৌমাছির কামড়ের শিকার হয়েছে। যে কারনে দুয়েক বছর মৌমাছি তাড়াতে চাকের কাছে কেরোসিন তেল দিয়ে রাখতেন। কিন্তু তাতে কাজ হতো না। পরে দেখা যেতো আগের চাকের পাশে ফের মৌমাছি চাক বেঁধেছে। এরপর থেকে অদ্যাবধি মৌমাছিরা কাউকে কামড় দেয়না।
প্রতিবেশি গৃহবধূ তাসলিমা খাতুন বলেন, প্রথম দিকে প্রায় সব সময় মৌমাছি তাদের বাড়ি-ঘরে এসে জ্বালাতন করত। একটু তাড়াতে গেলেই মাঝে মধ্যে হাল বসিয়ে দেয়। কিন্তু কি করবো? মৌমাছিরা অবলা সৃষ্টি, সে কারনে সব সামলে নিতে হয়।
খুলনা গেজেট /এমএম