এ্যাপাচি মোটরসাইকেল কিনে না দেয়ায় পিতার ওপর অভিমান করে চিরকুট লিখে মণিরামপুরে রাকিবুল হাসান (২০) নামে এক কলেজ ছাত্র গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সে উপজেলার নোয়ালী গ্রামের আবু মুছা গাজীর পুত্র। সোমবার (৩ মে) সকালে শোবার ঘর থেকে রাকিবুল হাসানের মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনরা।
তবে কলেজ ছাত্রের আত্মহত্যা মানতে নারাজ তার মা লিলিমা খাতুন। তার দাবী, সৎ মায়ের ষড়যন্ত্রে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
জানাযায়, কলেজ ছাত্র রাকিবুল হাসানের বয়স যখন ৫ বছর ওই সময় পারিবারিক কলহের জের ধরে তার মা ও পিতার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকেই রাকিবুল ও তার ছোট বোন লাবনী সৎ মা রেশমা খাতুন ও পিতার পরিবারে ছিল। রাকিবুল সাতক্ষীরা জেলার কলোরোয়া উপজেলার নাসিরউদ্দীন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। কয়েকদিন ধরে তার পিতার কাছে এ্যাপাচি মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার জন্য বায়না ধরে।
কলেজ ছাত্র রাকিবুলের মা লিলিমা খাতুন বলেন, প্রাপ্ত বয়সের আগেই আবু মুছার সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তার ওপর নির্যাতন চালাতো স্বামী মুছা। দাম্পত্য জীবনে তাদের এক ছেলে ও এক কন্যার জন্ম হয়। ওই সময় তার স্বামী আবু মুছা রেশমা খাতুন নামের এক নারীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে তাকে বিয়ে করে। এক পর্যায় রেশমাকে দ্বিতীয় বিয়ে করে বাড়িতে আনলে তার ও সন্তানদের ওপর নির্যাতন বেড়ে যায়।
প্রথম স্ত্রী লিলিমা খাতুন জানান, ধারাবাহিক নির্যাতনের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটার ৮ বছর পর তিনি অন্যত্রে বিয়ে করেন। তার দাবী সৎ মা রেশমা ও স্বামী আবু মুছা মিলে তার ছেলেকে মেরে ঘরের আড়ায় মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে।
স্থানীয় রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ শাহাজাহান আলী জানান, ময়নাতদন্ত সম্পন্নের পর কলেজ ছাত্র রাকিবুলের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বেরিয়ে আসবে।
মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি