অভাব অনাটনের সংসার কিছুটা স্বছলতা ফিরিয়ে আনতে জাহিদুল হাসান রাজু (৩০) প্রায় ৮ বছর আগে দেশের মায়া ত্যাগ করে চলে যান মালায়েশিয়ায়।
আগামী বছরর প্রথম দিকে তার বাড়ি আসার কথা ছিল। বাড়িতে এসে মােবাইলে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া স্ত্রীকে নিয়ে আসবে বাড়িতে। কতই না স্বপ ছিল তার কি নির্ধারিত সময়ের আগেই সে বাড়িতে এলাে তবে কফিনে বন্দি হয়ে। মালায়েশিয়ায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় সে মারা যায়। রবিবার সকালে মরাদেহ বাড়িতে এলে এক হৃদয় বিদারক পরিসিতির সৃষ্টি হয়। সকালেই নামাজের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন হয়।
উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের বড় নিয়াতমপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে জাহিদুল হাসান রাজু। চার ভাই আর দুই বােনের মধ্যে সে সকলের ছােট। অভাব নামক দানব যখন সংসারে চেপে বসে ঠিক সেই সময় পরিবারের সিদ্ধান্ত মােতাবেক রাজু প্রায় ৮ বছর আগে পাড়ি জমায় সুদুর মালায়েশিয়ায়। সে মালায়েশিয়ার মালাক্কা নামক এলাকাতে থাকত। গত আট বছর মােটামুটি রােজগারও করেছে।
গত দেড় মাস আগে পরিবারের সিদ্ধান্তে সুদুর মালায়েশিয়া হতে মােবাইল ফােনের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা জেলায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় প্রবাসি রাজু। ২০২৪ সালের প্রথমে দিকে তার বাড়িতে আসার কথা ছিল এবং বাড়িতে এসেই জাকজমক ভাবে নবধুকে চুয়াডাঙ্গা থেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসার স্বপ ছিল রাজুর। কি মালায়েশিয়াতে এক মর্মান্তিক মােটরসাইকল দুর্ঘটনায় রাজুসহ দুই পরিবারের স্বপ্ন তছনছ করে দিয়েছ।
নিহত রাজুর স্বজনরা জানান, গত ১৩ ডিসেম্বর সে মালায়েশিয়ায় মােটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থালেই মারা যায়। তার সহপাঠিরা নিহত রাজুর পরিবারকে দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করার পরে সকলেই কানায় ভেঙ্গে পড়েন। মরাদেহ বাড়িতে আনার জন্য শুরু হয় কার্যক্রম। দীর্ঘ কার্যক্রম শেষ করে শনিবার রাতে শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌছায় তার লাশ।
সেখান থেকে এ্যাম্বুলন্সে করে রবিবার সকালে কফিন বন্দি লাশ এসে পৌছায় নিজ গ্রাম নিয়ামতপুরে। রাজুর মরাদেহ বাড়িতে আসছে এমন খবর গ্রামবাসি, আত্মীয় স্বজন এমনকি নববধুর পরিবারের সদস্যরাও চলে আসেন নিয়ামতপুরে।
খুলনা গেজেট/ টিএ