খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ

মমির মুখে সোনার জিহ্বা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে মিশর এক বিস্ময়ের নাম। গত ৩০০ বছরে ধরে অসংখ্য প্রত্নতাত্ত্বিক অভিযান পরিচালিত হয়েছে মিশরে। এক সময় অনেকে মনে করতেন মিশরে বড় ধরনের কিছু আর নতুন করে অবিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। তবে ইজিপ্টলোজির অনেক পন্ডিতগণ বরাবরই বলে আসছেন, যা আবিষ্কার হয়েছে তার চেয়েও অনেক কিছু অনাবিস্কৃত রয়ে গেছে।

আসলেই তাই। প্রাচীন মিশরের বিস্ময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি। এই তো মাস তিনেক আগেই প্রত্নতাত্ত্বিকরা সাক্কারার প্রাচীন সমাধিভূমিতে খনন করে কয়েক ডজন নতুন মমি এবং ৫৯টি সারকোফ্যাগাস আবিষ্কার করেছিলেন। সারকোফ্যাগাস হচ্ছে কফিন যেখানে মমি রাখা হয়। এসব সারকোফ্যাগাস প্রায় ২ হাজার ৫০০ বছর আগের।

আর এবার ট্যাপসিরিস ম্যাগনা সাইটে খননকার্য চালিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিকরা ১৬টি প্রাচীন সমাধি খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু এসব কফিন খুঁজে পাওয়াই মূল বিষয়বস্তু নয়। প্রত্নতাত্ত্বিকরা চমকে উঠেন একটি সারকোফ্যাগাস খোলার পর। একটি মমির মুখের ভেতর থেকে যেন ঠিকরে আসছে আলো। পরে দেখা যায় যে ওটা আসলে একটা সোনার জিহ্বা! এই সোনার জিহ্বাটি নিয়ে আপাতত নানা জল্পনা চলছে প্রত্নতত্ত্বমহলে।

নতুন এই খননকার্য চালায় ইউনিভার্সিটি অব সান্তো দমিনগো’র প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ। বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরেই তারা গবেষণা করছেন ট্যাপসিরিস ম্যাগনা সাইটে। তবে সোনার জিহ্বার ঘটনা এটাই প্রথম। অন্য কোনো ঐতিহাসিকদের এমন পূর্ব-অভিজ্ঞতা নেই।

সাধারণত মমি তৈরির সময় শরীরের ভেতর থেকে বার করে নেওয়া হতো নাক, জিহ্বা, অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, মস্তিষ্ক সবই। শুধু অক্ষত রাখা হতো হৃদপিণ্ডকে। পরবর্তীকালে তা শুকনো করে আবার ভরে দেওয়া হতো কফিনের মধ্যে। গবেষকদের প্রাথমিক ধারণা এক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির জিহ্বা অপসারণের পর নতুন স্বর্ণ-জিহ্বা প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে। সঠিক কারণটি নিশ্চিত করে বলা যদিও সম্ভব নয়। তবে মনে করা হচ্ছে, মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের বিচারের দেবতা আসিসিরিসের সঙ্গে যাতে কথা বলতে পারে ওই ব্যক্তি, সে জন্যই এমন ব্যবস্থা নিয়েছিলেন মিশরীয়রা।

নতুন আবিষ্কৃত এসব সমাধির বয়স প্রায় ২ হাজার বছর। সেসময় গ্রিক ও রোমান সাম্রাজ্যের যথেষ্ট প্রভাব মিশরজুড়ে। পাথুরে জমিতে কফিন বসানোর চল সেই সময় থেকেই এসেছিল মিশরে। মমিগুলোর বেশ কয়েকটির ক্ষেত্রেই নষ্ট হয়ে গেছে শরীরের অংশ। তবে সবগুলোর পাথরের মুখাবরণ ঠিকঠাক আছে। জীবদ্দশায় কাকে কেমন দেখতে ছিল, তা বোঝা যাচ্ছে স্পষ্ট। তবে মমির দেহের মধ্যে সোনার জিভ সংযোজনের বিষয়ে রহস্য উন্মোচন হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা দরকার বলে মনে করছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা।

মিশরের এই এলাকা অনেক বছর ধরেই ঐতিহাসিক আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। ক্লিওপেট্রার প্রতিকৃতি শোভিত স্বর্ণমুদ্রাও পাওয়া গিয়েছিল এখান থেকে। যা থেকে অনুমান করা হয় যে, ক্লিওপেট্রার সমকালীন ব্যক্তিদেরও এখানে কবর দেওয়া হতো।

খুলনা গেজেট/কেএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!