খুলনায় ৯ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে জিয়া হল। সভা-সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার মতো ভালো জায়গা না থাকায় ক্ষুব্ধ নগরবাসী। খুলনা সিটি কর্পোরেশন জিয়া হল ভেঙ্গে সেখানে ‘সিটি সেন্টার’ নির্মাণের পরিকল্পনা করলেও তাও থমকে আছে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না মেলায়। নগরীর শিববাড়ি মোড়ের এই মেগা প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৮৯ কোটি টাকা।
খুলনা নগরীর শিববাড়ি মোড়ে ১৯৯২ সালে পৌণে দুই একর জমিতে নির্মাণ করা হয় জিয়া হল। দোতলা এই হলের অবকাঠামোতে ব্যয় হয় প্রায় ৯ কোটি টাকা। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে এটি। এরপর পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় ২০১২ সালে।
এর আগে ২০০৮ সাল থেকে কেসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জিয়া হল সংস্কার না করে সেটা ভেঙ্গে ‘সিটি সেন্টার’ নির্মাণ করা হবে। এরপর একযুগ পার হলেও প্রকল্পটি এখনো অনুমোদনই পায়নি। ফলে বড় কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনে দেখা দিয়েছে জায়গা সংকট। এতে অনেকটাই ক্ষুব্ধ সংস্কৃতিকর্মী ও নাগরিক নেতারা।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের চীফ প্লানিং অফিসার আবির উল জব্বার খুলনা গেজেটকে জানান, খুলনা জিয়া হল (পাবলিক হল) ভেঙ্গে ২২ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন তৈরী করা হবে। যার নামকরণ করা হবে ‘সিটি সেন্টার’। যেখানে থাকবে সকল ধরণের সুবিধা। গত বছর জুলাই মাসের প্রথমদিকে একটি প্রস্তাবনা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সাধারণ সভায় এটি অনুমোদন হয়নি। পরবর্তী সভায় মন্ত্রণালয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু মহামারি করোনার কারণে তাদের স্থান পরিদর্শনের দিনক্ষণ পিছিয়ে যায়। আগামী মাসে প্রতিনিধি দলটি খুলনায় আসতে পারে। এ ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে ৮৮৯ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এখানে প্রথম থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত হল রুম থাকবে। প্রত্যেকটি হল রুমের ভেতর সাড়ে তিন হাজার লোকের বসার ব্যবস্থা থাকবে। সামনে থাকবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। ছাদের ওপরে থাকবে রেস্টুরেন্ট। এ অবকাঠামোটি তৈরী হলে খুলনার দৃশ্যপট পাল্টে যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কেসিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী-৩ মশিউজ্জামান খান জানান, মন্ত্রণালয়ের কমিটি আগামী মাসে স্থান পরিদর্শন করার পর স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি চূড়ান্ত হলেই পাবলিক হল ভাঙ্গার কাজ শুরু হবে।
তবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের এস্টেট অফিসার মোঃ নুরুজ্জামান তালুকদার জানান, পাবলিক হলটি ব্যবহারের অযোগ্য ও ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের আলোচনার পর থেকে ভাঙ্গার জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। তাতে ৪০ লাখ টাকা ধার্য করা হয়। কিন্তু সেখানে ২০ লাখ টাকার ওপরে কেউ দরপত্র জামা দেয়নি। তাই পাবলিক হলটি ভাঙ্গার উদ্যোগ নিয়েও বন্ধ রাখা হয়েছে।