যশোরের মণিরামপুরে প্রগতি ডিজিটাল রিজু হসপিটাল নামক একটি ক্লিনিকে ভুয়া আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট তৈরী করে অর্থ হাতানোসহ এক গৃহবধূকে ভুল অপারেশনের অভিযোগ উঠেছে। এমন ঘটনায় বর্তমানে ওই গৃহবধূর শাররিকি অবস্থা আশ্ঙ্ককাজনক। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে তার স্বামী যশোর সিভিল সার্জন, মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, উপজেলা সুবোলকাটি গ্রামের জুলফিক্কার ঢালীর স্ত্রী ৪ সন্তানের মা তাসলিমা বেগম (৪৫) এর হঠাৎ পেটে ব্যাথায় গত ২২ জুন তাকে নেয়া হয় পৌর শহরের মোহনপুর বটতলা নামক স্থানে অবস্থিত প্রগতি ডিজিটাল ক্লিনিকে। এরপর ক্লিনিকের ম্যানেজার আব্দুল হামিদের সহযোগীতায় ডাক্তার অথবা কোন অভিজ্ঞ না হলেও ক্লিনিকের মালিক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ওই গৃহবধূর ভুয়া আল্ট্রাসনোগ্রাফি তৈরী করেন। এক পর্যায় গৃহবধূর স্বামীকে বলা হয় আপনার স্ত্রীর ইসিজি ও রক্ত পরীক্ষা করে ধরা পড়েছে তার জরায়ু নাড়িতে বড় টিউমার এবং ইনফেকশন হয়েছে। ফলে তাকে দ্রæত অপরাশেন করতে হবে। এমন ভয়-ভীতি দেখিয়ে ২৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে পরের দিন তার স্ত্রীর কোমরে পর পর ৩টি অবাশ করা ইনজেকশন পুশ করেন ক্লিনিক মালিক জিন্নাহ নিজেই। এরপর এক কথিত মহিলা ডাক্তার দ্বারা অপারেশন করা হয়।
জুলফিক্কার ঢালী তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন অপারেশন করে তার স্ত্রীকে ওই ক্লিনিক থেকে বাড়ি নেয়ার পর কোমরসহ তার সমস্ত শরীর অবশ হয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে। এরপর খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করিয়ে দুই লক্ষ টাকার বেশী খরচ করলেও স্ত্রীকে সুস্থ্য করতে পারেননি তিনি। দিন দিন সে শুকিয়ে বাড়ির বিছানায় বর্তমানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
স্থানীয়রা জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওই ডিজিটাল ক্লিনিকে কয়েকবার অভিযান চালিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
জানতে চাইলে উক্ত ঘটনায় অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে যশোর সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন বলেন, কাগজ-পত্রে নানা অনিয়মের কারণে ইতিপূর্বে ওই ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। গৃহবধূর ভুল অপারশেনের অভিযোগের বিষয় তদন্তপূর্বক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শুভ্রারাণী দেবনাথ জানান, বন্ধ করার পরেও যদি গোপনে কার্যক্রম চালায় তাহলে ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, ক্লিনিক মালিক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ দাবী করেন, অপারেশনের পর গৃহবধূ তাসলিমা বেগমের বিষয়ে কেউ কোন কমপ্লেইন করেনি।
খুলনা গেজেট/কেএম