যশোর সরকারি সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র পল্লব দত্ত শ্রাবণ হত্যা মামলায় দু’ বন্ধুসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। নিহত পল্লব দত্ত ফরিদপুর জেলার সাধুহাটি উজিরপুর গ্রামের বিকাশ চন্দ্র দত্তের ছেলে। তিনি যশোর সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে থেকে পড়ালেখা করতেন।
চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলো, সদর উপজেলার জঙ্গলবাঁধাল গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে আলিফ আহম্মেদ অপূর্ব, একই গ্রামের ফারুকের ছেলে মারুফ ওরফে ইশান ও একই গ্রামের শেখ আজিজুর রহমানের স্ত্রী সাদিয়া সুলতানা। তদন্ত শেষে বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পের এসআই জাকির হোসেন আদালতে এ চার্জশিট জমা দেন।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, অপূর্বের সাথে অথৈ নামে একটি মেয়ের শারীরিক সম্পর্ক ছিল। যার একটি ভিডিও ছিল শ্রাবণের মোবাইল ফোনে। এছাড়া অপর আসামি ইশানের মুক্তা নামে এক মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিল। এসব বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এ দ্বন্দ্বের জের ধরে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর শ্রাবণকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায় ওই দু’ আসামি। তারা অপূর্বের বাড়িতে নিয়ে ওই ভিডিও ডিলিট করতে বলে। এ কাজে রাজি না হওয়ায় শ্রাবণকে খাটের ওপর চেপে ধরে ইশান ও পা ধরে অপূর্ব। এরপর মুখের মধ্যে কাপড় ঢুকিয়ে ইশানের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে বুকে আঘাতের মাধ্যমে তারা হত্যা করে। পরে লাশ বস্তাবন্দি করে ঘরের ড্রেসিং টেবিল সরিয়ে গর্ত করে তার মধ্যে পুতে দেয়। পরে ড্রেসিং ট্রেবিল ওই জায়গায় রেখে দিয়ে শ্রাবণের মোবাইল ফোন থেকে সেই ভিডিও ডিলিট করা হয়।
শ্রাবণকে খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে তার বাবা ২২ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন। পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে ৯ নভেম্বর অপূর্বকে আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তিতে জঙ্গলবাঁধাল গ্রামের আজিজুর রহমানের বাড়ি থেকে শ্রাবণের ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়। আটক করা হয় ইশানকে। তাদের দেখানো মতে আলিফ আহম্মেদ ওরফে অপূর্বের বসতঘরের ড্রেসিং টেবিলের নীচ থেকে পল্লব দত্ত শ্রাবণের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা হয়। আসামি সাদিয়া সুলতানা খুন ও গুমের কথা জানতেন। ফলে তাকেও এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি