খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ কার্তিক, ১৪৩১ | ২৫ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১১২৯
  সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিন্ধান্ত
  তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে তিন রিভিউ আবেদনের শুনানি ১৭ নভেম্বর

ভাগ্য বদ‌লে দি‌য়ে‌ছে আ‌নোয়ার ভাই‌য়ের ‘মু‌ড়ি মসলা’ 

নিজস্ব প্রতিবেদক

আনোয়ার হোসেন। খুলনা বিএল কলেজ শিক্ষার্থীদের কাছে এক জনপ্রিয় নাম। ওই এলাকার একজন মুড়ি মসলা বিক্রেতা তিনি। তার বানা‌নো  মুড়ি মসলার স্বাদ নি‌তে নগরীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ভিড় দেখা যায় আনোয়ার হোসেনের দোকানে।

বরিশালের বাকেরগঞ্জ এলাকার মানুষ তিনি। বাবা ছিলেন পেশায় একজন কৃষক। তিন ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন মেজ। শৈশবে বাবা মারা যান। লেখাপড়া তেমন একটা করতে পারেনি। জীবন যুদ্ধে নামতে হয় তাকে। ২০০০ সালে বরিশাল থেকে খুলনায় আসেন। কি করবেন ভেবে পারছিলেন না। পরে বিএল কলেজের শিক্ষকদের অনুমতিক্রমে বকুল গাছের নীচে অস্থায়ীভাবে মুড়ি মসলার ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ওই স্থানে মুড়ি মসলা বিক্রি করে জন‌প্রিয়তা পান আনোয়ার।

২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশে কড়াকাড়ি আরোপ করে কর্তৃপক্ষ। কলেজ চত্বর থেকে ব্যবসা গুটিয়ে গেটের সামনে চলে আসেন। অর্থ সংকটের কারণে তিনি স্থায়ীভাবে কোন দোকান নিতে পারেনি, গেটের সামনে অস্থায়ীভাবে ব্যবসা করছেন। ত‌বে বেচাকেনা বেশ ভালই চলছে তার।

সংসার জীবনে তিন ছেলে রয়েছে তার। সকলে লেখাপড়া করে। বড় ছেলে বিএল কলেজের দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বাবা একজন মুড়ি বিক্রেতা, এ নিয়ে ছেলের কোন আ‌ক্ষেপ নেই বলে জানান আনোয়ার হোসেন। অন্যান্য ছেলেরা মাদ্রাসা ও স্কুলে পড়াশুনা করেন।

মুড়ি মসলা বিক্রি করে তিনি দৌলতপুরের দেয়ানা এলাকায় জমি কিনেছেন। সেখানে বাড়িও করেছেন। সব মিলিয়ে বেশ ভালই আছেন।

এর আ‌গে করোনার সময়ে কিছুটা অর্থ কষ্টে ছিলেন তিনি। প্রশাসনের চাপের মুখে বন্ধ রাখতে হয়েছিল তার দোকান। ঋণগ্রস্থ হতে হয়েছে তাকে। করোনা পরবর্তীতে সব কিছু স্বাভাবিক হওয়ার পর তিনি আবার দোকান খুলেছেন। ব্যবসা চলছেও ভাল। সকলের ঋণ কিছু কিছু করে শোধ করছেন।

কুড়ি টাকায় পাওয়া যায় এক প্লেট মুড়ি মসলা। সেখানে দেওয়া হয় চুইঝাল ও রসুন। বেশ সুস্বাদু।

বৃহস্পতিবার সকালে কথা হয় বিএল কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মনোয়ারা আক্তার মুক্তির সাথে। তিনি জানান, ক্লাস চলার ফাঁকে চ‌লে সহপাঠিসহ এখানে এসে মুড়ি খাওয়া। তার মুড়ি না খেয়ে কলেজ অথবা বাড়ি যেতে পারি না।

রসায়ন বিভাগের ছাত্র আনিস জানান, আনোয়ার ভাইয়ের মুড়ি মসলা অসাধারণ। তার নাম শুনলে জিহ্বায় জল আসে। দূর দূরান্ত থেকে এ মুড়ি মাখা খেতে লোকজন এখানে আসে।

দেখা হয় খুলনা কাষ্টমঘাট এলাকার বাসিন্দা রসুলের সাথে। তিনি এক সময় বিএল কলেজের ছাত্র ছিলেন। আনোয়ার ভাইয়ের মুড়ি মসলার টেষ্ট আলাদা। তাই কাজের ফাঁকে সময় পেলেই চ‌লে আ‌সেন আনোয়ার ভাইয়ের দোকানে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!