বৃহত্তর যশোর জেলার প্রায় ৩শ’ অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। ধারাবাহিকভাবে মাসব্যাপী এ উচ্ছেদ অভিযান চলবে। রোববার অভিযানের শুরুতে যশোরের নয়টি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চার উপজেলায় এ অভিযান পরিচালিত হয়। সোমবার যশোরের আরো ১৩টি ভাটা উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক সাঈদ আনোয়ার জানান, যশোর জেলায় দুই শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। যারমধ্যে ১৮০টি ভাটা অবৈধ। এসব ভাটার লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র নেই। অবৈধ এ ভাটাগুলো বায়ুদূষণ করে চলেছে। সারাদেশের অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদের অংশ হিসেবে রোববার যশোরে ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোজিনা আক্তারের নেতৃত্বে সকাল থেকে কেশবপুর, মণিরামপুর, ঝিকরগাছা এবং যশোর সদর উপজেলার নয়টি ইটাভাটা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সোমবারও জেলার ১৩টি ইটভাটা উচ্ছেদ করা হবে। গুঁড়িয়ে দেয়া ইটভাটাগুলো হলো, কেশবপুরের সাতবাড়িয়া এলাকার মেসার্স সুপার ব্রিকস, বেগমপুর বাজার এলাকার মেসার্স রিপন ব্রিকস, মণিরামপুর উপজেলার মেসার্স সরদার ব্রিকস, ঝিকরগাছা উপজেলার লাউজানি এলাকার মেসার্স এলবি ব্রিকস, মেসার্স জনতা ব্রিকস, যশোর সদর উপজেলার মালঞ্চী এলাকার মেসার্স এমবিবিআই ব্রিকস। বাকি অবৈধ ভাটাগুলো পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ করা হবে বলে ম্যাজিস্ট্রেট জানিয়েছেন।
সাঈদ আনোয়ার আরো জানান, যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের আওতাধীন নড়াইল, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলায় প্রায় ৩শ’ অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। এ সপ্তাহ জুড়ে ওইসব ভাটাতেও উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। প্রতি জেলায় দু’দিন করে অভিযান চলবে। এভাবে প্রতিমাসে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ইটভাটাগুলো উচ্ছেদ করা হবে।
এদিকে, নোটিশ ছাড়াই ইটভাটা ভেঙে দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভাটার মালিক ও শ্রমিকরা। এলবি ব্রিকসের মালিক আব্দুর রশিদ বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশের কথা বলে কোনো নোটিশ ছাড়াই ইটভাটা ভেঙে দেয়া হয়েছে। আমি বলেছিলাম আপনারা সিলগালা করে দেন। আমি ভাটা চালাবো না। কিন্তু তারা ভাটা ভেঙে প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে। আমার এখানে ৫শ’ শ্রমিক কাজ করে।
জনতা ব্রিকসের ম্যানেজার বলেন, ১৯৮৯ সাল থেকে এ ভাটা চলছে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত সকল কাগজপত্র ছিল। ওইসাল থেকে আর লাইসেন্স নবায়ন করেননি কর্তৃপক্ষ। বারবার লাইসেন্সের জন্য গেলে বলা হয় এখন বন্ধ আছে। অথচ সরকারি কর্মকর্তারা এসে ভ্যাট নিয়ে যায়। দুই মাস আগেও পাঁচ লাখ টাকা ভ্যাট দেয়া হয়েছে। ভাটার নামে ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি ঋণ রয়েছে। মানুষের কাছে ৫০ লাখ টাকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় ইটভাটা ভেঙে দেয়ায় সব শেষ হয়ে গেল।
খুলনা গেজেট / এমএম