বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ইডেনের মাঠে আজ বাংলাদেশ-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে কত আগ্রহ থাকতে পারত। কারা একাদশে নামবেন, সাকিব কী করবেন, রিয়াদ কী করবেন, পাকিস্তানের বাবর আজমকে কীভাবে আউট করতে হবে, রিজওয়ানকে কীভাবে ড্রেসিং রুমে ফেরাতে হবে, কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে বেলা আড়াইটয় যখন টস করতে নামবেন সাকিব, তখন পিচের অবস্থা কেমন থাকবে, টস জিতলে ব্যাট না বোলিং নিলে ভালো হবে—এমন কতশত প্রশ্ন মুখে মুখে ঘুরে বেড়াত।
আজ সেটা নেই। সেই আগ্রহের ফুল শুকিয়ে গেছে।
দেশের ক্রিকেট-পাগল দর্শক হতাশ হয়েছে। সাকিব, হাথুরুসিংহের প্রতি শ্রদ্ধা নেই। সাধারণ মানুষ মনে করে, তাদের হাতে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের স্বপ্নটা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।
কলকাতায় ১০ হাজার দর্শক গেছেন খেলা দেখতে। হোটেলে অবস্থান করছেন। কলকাতায় প্রথম ম্যাচ দেখে দেখে তারাও হতাশ। অপেক্ষায় রয়েছেন—দ্বিতীয় ম্যাচটায় যদি জয় নিয়ে ফেরা যায়, তাহলে বাড়ি ফিরে মুখ দেখানো যাবে। এটাই সান্ত্বনা। অথচ এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ছিল ক্রিকেট দুনিয়ায় অন্যতম আলোচিত একটি দল। সেই দলের এখনকার যে অবস্থান, তা নিয়ে আশাকরার কিছু নেই। টানা পাঁচ হার নিয়ে আজ ৭ নম্বর ম্যাচে লড়াই করতে নামবে বাংলাদেশ।
ইডেনের এই মাঠেই নেদারল্যান্ডসের মতো দলকে হারাতে পারেনি। যেখানে সবকিছুই বাংলাদেশের পক্ষে ছিল। ইডেনের চেনা পিচ, আউটফিল্ড, চেনা কন্ডিশন, পিচ তো মিরপুরের মতো। যেখানে খেলে খেলে এই ক্রিকেটাররা বড় হয়েছেন, সেই সব সুবিধা পেয়েও বাংলাদেশের ব্যাটাররা নেদারল্যান্ডসের সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছিলেন। এমন হতশ্রী দেশের মানুষের বুক ভেঙে দিয়েছে। সেই লজ্জার হারের পর মাঝে দুই দিন গেছে। আজ আবার সেই মাঠেই খেলা। এবার তো শক্তিশালী পাকিস্তান।
১৯৯৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলেছিল বাংলাদেশ। সেবার পাকিস্তানকে হারিয়েছিল। সেই দলের ক্রিকেটার ছিলেন আকরাম খান। এবার তিনি বিসিবিতে কর্তা হিসেবে আছেন। সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান বিশ্বকাপের এই টুর্নামেন্টে যেমন দেখেছেন পাকিস্তানকে। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান সবচেয়ে বাজে অবস্থায় রয়েছে। শক্তির বিচারে পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশকে ওপরে রাখছেন আকরাম খান।
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের দুজন ব্যাটার ছাড়া অন্যরা সুবিধায় নেই। এখন আমাদের দেখতে হবে আমরা কতটা ভালো খেলি।’ সেমিফাইনালের স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে আগেই। এখন আর পাওয়ার কিছু নেই বাংলাদেশের। এখন টার্গেট হচ্ছে আগামী চ্যাম্পিয়ন ট্রফি। সেখানে খেলতে হলে বিশ্বকাপের পয়েন্ট তালিকায় সাতের মধ্যে থাকতে হবে। এই নিয়ম দুই দিন আগে করেছে আইসিসি। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পারবে কি না, সেটা নির্ভর করছে আগামী তিন ম্যাচের ওপর, যেখানে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান ছাড়াও শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়া। সেখানেও জয় পেতে হবে। গতকাল কলকাতায় সংবাদ সম্মেলনে আসা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান চ্যাম্পিয়ন ট্রফির টার্গেটের কথা জানিয়ে গেছেন।