খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী : রায় কবে জানা যাবে আজ

ফ্লু কর্ণারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে করোনা পরীক্ষা সহজ করেন ডাঃ জিল্লুর রহমান তরুণ

বশির হোসেন

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা সাসপেকডেট আইসোলেশন ওয়ার্ড ও ফ্লু কর্ণার এবং কোভিড-১৯ পরীক্ষা হয় নতুন আইসিইউ ভবনের নিচ তলায়। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে সরকারি চাকুরীজীবীদের কারণে সাধারণ মানুষের করোনা পরীক্ষা করানো দুরহূ হয়ে পড়েছিল। ফলে একদিকে ভীড় অন্যদিকে সেবা বঞ্চিত মানুষের ক্ষোভে সার্বক্ষণিক বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছিল ফ্লু কর্ণারের সামনে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দায়িত্ব পেয়ে রাতারাতি অবস্থার উন্নতি করেন ডাঃ জিল্লুর রহমান তরুণ। এতে একদিকে, করোনা সাসপেকটেড রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত হয়; অন্যদিকে সাধারণ মানুষ অনেক বেশি হারে ভোগান্তি ছাড়াই করোনা পরীক্ষা করতে পারছেন। এছাড়াও করোনা রিপোর্ট প্রদানে আধুনিক সফটয়্যার ব্যবস্থা তৈরি ও প্লাজমা ব্যাংক নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন এই করোনা যোদ্ধা।

ডাঃ জিল্লুর রহমান তরুণ, খুলনা মেডিকেল কলেজের ব্লাড ট্রান্সমিউশন বিভাগের মেডিকেল অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন। মার্চের শুরুতে করোনার সংক্রমণ শুরু হলে যখন চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণের তীব্রতা নিয়ে চিকিৎসকের মধ্যেই কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাজ করলেও তখন ফ্লু কর্নারে করোনা সাসপেকটেড রোগীদের চিকিৎসা দেন নিজ হাতে। চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি যুক্ত থাকেন করোনা চিকিৎসায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুরো ব্যবস্থাপনার সাথে। নিজ দায়িত্বের বাইরে এসে মানবিক দায়িত্ব হিসাবে কাঁধে তুলে নেন হাসপাতালের করোনা রোগীদের চিকিৎসার বিষয়। বিশেষ করে ফ্লু কর্ণারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে প্রশংসা কুড়ান তার সিনিয়রদের কাছ থেকে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ এর কে-১৬ ব্যাচের এই ছাত্র পেশাগত জীবনেও নিজের প্রতিষ্ঠানে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন উজাড় করে। করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা রোগীদের ফলাফল পেতে নানান ভোগান্তীর শিকার হতো। বিশেষ করে নেগেটিভ হলে কেউ জানতেই পারতেন না, তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে কি না ? এ অবস্থার উত্তরণে ডাঃ জিল্লুর রহমান তরুণ অটমেটেড সফটয়্যার ব্যবস্থার ধারণা নিয়ে আসেন তার সিনিয়রদের সামনে। এরপর সিনিয়রদের নির্দেশনা অনুযায়ী সংক্রিয় ব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে সবাই জানতে পারে তার ফল নেগেটিভ বা পজেটিভ আসছে।

করোনা রোগীদের চিকিৎসায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্লাজমা থেরাপি। খুলনা মেডিকেল কলেজের ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগের মেডিকেল অফিসারের দায়িত্ব পালন করা এই করোনা যোদ্ধা তৈরী করেছেন একটি প্লাজমা ব্যাংক। তাতে করোনা থেকে মুক্ত হওয়া মানুষের নাম ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণ করা থাকে । প্রয়োজন অনুযায়ী তার শরীর থেকে রক্ত নিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনার সেল কাউন্টার মেশিনের মাধ্যমে প্লাজমা আলাা করে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে দেয়া হয়। এই পুরো ব্যব্স্থাপনার মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন ডাঃ জিল্লুর রহমান তরুণ।

ডাঃ জিল্লুর রহমান তরুণ বলেন, আমি এই খুলনার ছেলে। এই (খুলনা মেডিকেল কলেজে) খুলনায় লেখাপড়া করেছি। সারাক্ষণ ভাবি খুলনার মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে পিছপা হবো না। হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে বেশিরভাগই আমার সরাসরি শিক্ষক। তাদের সাথে থেকে করোনা রোগীদের জন্য কিছু করতে পারছি এই ভেবে আমি সত্যি আনন্দিত। তবে খুলনায় করোনা চিকিৎসা সারাদেশের করোনা চিকিৎসার থেকে অনেক ভালো। আমাদের পরীক্ষা ব্যবস্থাসহ চিকিৎসার সার্বিক বিষয় আমরাই সারা দেশে রোল মডেল। বিশেষ করে এটা সম্ভব হয়েছে খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাউদ্দিন জুয়েলের নির্দেশনায়, এটা মানুষের জানা প্রয়োজন। আমরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি করোনা রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য। এখনও যেসব লজিস্টিক সাপোর্ট এর অভাবে আমরা মনের মত সেবা দিতে পারছি না সেদিকে কর্তৃপক্ষ নজর দেবেন বলে আশা করি।

খুলনা গেজেট/এমবিএইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!