প্রেমঘটিত কারণে সাতক্ষীরায় কলেজ ছাত্র চন্দ্র শেখরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। মোবাইল ফোনের একটি ম্যাসেজের সূত্র ধরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আশাশুনি উপজেলার বৈকরঝুটি গ্রামের মজিদ মোড়লের ছেলে মোবাশ্বেরকে ফোন করে থানায় ডেকে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় সে চন্দ্র শেখরকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক পুলিশ বুধবার সকালে নিহত চন্দ্র শেখরের ব্যবহৃত মোবাইল, সিম, লুঙ্গি ও জুতা উদ্ধার করে।
প্রেমঘটিত কারণে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোবাশ্বের স্বীকার করেছে। বুধবার (২১ অক্টোবর) বিকালে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে আটক মোবাশ্বের।
আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কবির জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোবাশ্বের তার বন্ধু চন্দ্র শেখরকে শ্বাসরাধ করে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক নিহত চন্দ্র শেখরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি শোভনালী এসডিএফ গ্রাম সমিতির কার্যালয়ের পাশে একটি ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লুঙ্গি ও জামা উদ্ধার করা হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৫শ’ গজ দুরে জনৈক বাবুর মৎস্য ঘের থেকে এবং মোবাইলের সিমটি উদ্ধার করা হয় গ্রামের একটি রাস্তার পাশে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায়। প্রেমঘটিত একটি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে সে স্বীকার করেছে।
ওসি আরো জানান, নিহত চন্দ্র শেখর ও ঘাতক মোবাশ্বের দু’জনে পরস্পরের বন্ধু। ঘটনার রাতে সে চন্দ্র শেখরের মৎস্য ঘেরের বাসায় গিয়ে তার সাথে গল্পগুজব করার এক পর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর সে বাসা থেকে লাশ গুম করতে মৎস্য-ঘেরের ডাল-পালার ভেতরে উলঙ্গ করে লুকিয়ে রাখে। এরপর সে নিহতের লুঙ্গি, জুতা ও মোবাইল ফোন নিয়ে ঘেরের বাসায় তালা ঝুলিয়ে চলে যায়। ৬০ হাজার টাকা দিলে চন্দ্র শেখরের খোঁজ দেবে বলে সে সকালে নিহতের বাবার কাছে ম্যাসেজ করে। ফোনের ওই ম্যাসেজ এর সূত্র ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মোবাশ্বের নিজেই হত্যা করেছে বলে স্বীকার করে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১৯ অক্টোবর) সকালে উপজেলার শোভনালী গ্রামের নিজের মৎস্য ঘের থেকে ভাসমান অবস্থায় বৈকরঝুঁটি গ্রামের শংকর সরকারের একমাত্র ছেলে কলেজ পড়ুয়া চন্দ্র শেখরের (২২) এর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে আশাশুনি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম