করোনার কারণে প্রায় সাড়ে সাত মাস বন্ধ থাকার পর আজ রবিবার থেকে খুলছে সুন্দরবন। করোনা সংক্রমণ এড়াতে পর্যটকদের কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা দিয়েছে বনবিভাগ। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের।
করোনার কারণে গত ১৯শে মার্চ থেকে সুন্দরবনে পর্যটকদের ঢুকতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার সাড়ে ৭ মাস পর খুলছে বিশ্বের বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। তবে, যারা বনে ঘুরতে যাবেন তাদের কঠোরভাবে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। দীর্ঘদিন পর সুন্দরবনে ঘোরার অনুমতি পাওয়ায় পর্যটকদের পাশাপাশি খুশি পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। দীর্ঘদিনের লোকসান কাটিয়ে উঠতে আর পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছেন ট্যুর অপারেটররা। তবে পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে তারা সহায়তা চান বন বিভাগেরও।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার রোধে গত ১৯ মার্চ থেকে সুন্দরবনে পর্যটকদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তারপর থেকে সাত মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর প্রত্যাহার হচ্ছে সেই নিষেধাজ্ঞা। রবিবার (১ নভেম্বর) থেকে খুলে দেওয়া হচ্ছে সুন্দরবন।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটনকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ কবির বলেন, ‘কোভিড-১৯ শুরুর পর মার্চ মাসের ১৯ তারিখ থেকে সুন্দরবনে পর্যটক নিষিদ্ধ করা হয়। আজ থেকে চালু হচ্ছে আবার। তবে আগের মতো খোলামেলাভাবে পর্যটনে আসা যাবে না। সরকারের নির্দেশিত যেসব স্বাস্থ্যবিধি সেসব অবশ্যই মানতে হবে। প্রত্যেক পর্যটকের অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সামাজিক এবং শারীরিক দূরত্ব অবশ্যই মানতে হবে। লঞ্চ থেকে সরাসরি কোনো পর্যটক বনে প্রবেশ করতে পারবে না। ছোট ছোট ডিঙি নৌকা নিয়ে খালের ভেতর গিয়ে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে। আমরা পর্যটকদের সবসময় সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বললেন, বনবিভাগের সুপারিশে পর্যটকদের বনে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্ত ভঙ্গ করলে আবারো জারি হতে পারে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা। শুক্রবার সকালে আমরা সব চিঠি পেয়েছি। আপাতত আর কোনো বাধা নেই। তবে বাধা একটাই আছে, সেটা হচ্ছে কোভিড-১৯। সেটা হচ্ছে সরকারের যে নির্দেশনা আছে অর্থাৎ কোনো একটি লঞ্চে ৫০ জনের বেশি উঠতে পারবে না। তাপমাত্রা মেপে তাদের উঠাতে হবে। যাই হোক, সামাজিক দূরত্ব যতটা পারা যায় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমি মনে করি, আমাদের বন কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই চেষ্টা করবে এবং যারা যাবে তারাও সরকারির এ নির্দেশনা মানার চেষ্টা করবে। তবে শর্ত ভঙ্গ করলে হয়তো আবারও সুন্দরবন পর্যটকদের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে সুন্দরবনের পর্যটন খাত থেকে কোনো রাজস্ব আয় হয়নি। তবে গেল অর্থবছরে (২০২০-১৯) পূর্বে এক কোটি ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫৮ টাকা এবং পশ্চিমে ৮২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৫০টাকা রাজস্ব আয় হয়েছিল।
খুলনা গেজেট/এমএম