খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  মেজর সিনহা হত্যা : ডেথ রেফারেন্স অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত, বুধবার থেকে শুনানি হাইকোর্টে
  ভিসি পদত্যাগের এক দফা দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন শুরু
  মারা গেছেন খ্রিস্টান ধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস, প্রধান উপদেষ্টার শোক
  ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় হরিণটানা, খালিশপুর ও আড়ংঘাটা থানায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ৩ মামলা, মোট আটক ৪০

পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে অভিনব গেম

গেজেট ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণের মোকাবিলা করতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তন চোখে পড়ছে৷ ছাপাখানা ও কাগজের ব্যবহারও তার ব্যতিক্রম নয়৷ সেইসঙ্গে প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগও বাড়ছে৷

আস্ট্রিড বুৎসিন অবসর সময়ের অনেকটা জুড়েই জংলি গাছপালা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেন৷ ‘যা চেনো, তা রক্ষা করো’ – এই বুলি সম্বল করে তিনি মানুষকে তাদের আশেপাশের জংলি গাছপালা চেনানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন৷ সেই লক্ষ্যে তিনি ‘নেচারমেমো’ নামের এক মেমরি গেম সৃষ্টি করেছেন৷ ফলে সব বয়সের মানুষ গাছপালা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারছে৷ আস্ট্রিড বলেন, ‘‘আমি চাই, জংলি গাছপালা আবার আমাদের জীবনযাত্রার অঙ্গ হয়ে উঠুক৷ এমনকি আরও এক ধাপ এগিয়ে আমি খাদ্যতালিকায় এমন উপকরণ দেখতে চাই৷ কারণ জংলি গাছপালার মধ্যে এমন পুষ্টি রয়েছে, যা চাষ করা শাকসবজির মধ্যে আজকাল দেখা যায় না৷”

পট্সডাম শহরে নিজের বাসায় অসংখ্য জংলি গাছপালা শোভা পাচ্ছে৷ তিনি সেখানে রান্নার ক্লাস নেন এবং একটি কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষা দেন৷ প্রকৃতির মর্যাদা তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই তাঁর পণ্যও পরিবেশবান্ধব৷ এমনকি ‘নেচারমেমো’ গেম তৈরি করার সময়েও তিনি ‘ক্রেডল টু ক্রেডল’ নামের মানদণ্ড মেনে চলেছিলেন৷ এই উদ্যোগ সম্পর্কে আস্ট্রিড বুৎসিন বলেন, ‘‘এর অর্থ, প্রাকৃতিক জগত, প্রকৃতির বৃত্তাকার মডেলের উপর ভিত্তি করে উৎপাদন করা হয়েছিল৷ খেলা শেষ হলে গেমটি খেয়ে নিতে পারেন, সেটি সত্যি খাবার যোগ্য৷ প্রাকৃতিক, উদ্ভিদভিত্তিক রং দিয়ে সেটি প্রিন্ট করা হয়েছে৷ অথবা প্রাকৃতিক সার হিসেবে সেটি ব্যবহার করা যায়, জঙ্গলে ফেলেও দেওয়া যায়৷ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোনো রাসায়নিক ব্যবহার না হওয়ায় বিবেক দংশনের প্রয়োজন নেই৷”

‘ক্রেডেল টু ক্রেডল’ মানদণ্ড শুধু কম্পোস্ট বা জৈব সারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়৷ পচনের সময়ে প্রায় কিছুই বের হয় না, যা পরিবেশের ক্ষতি করতে পারে৷ লোকাই নামের এক ছাপাখানা জার্মানিতে প্রথম এই মানদণ্ড অনুযায়ী ছাপার কাজ শুরু করে৷ রাল্ফ লোকাই নিজের বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে কোম্পানির দায়িত্ব পেয়েছিলেন৷ তারপর পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি চালু করেন৷ রাল্ফ বলেন, ‘‘আমার মতে, পরিবেশের ক্ষতি না করা সব কোম্পানিরই দায়িত্বের মধ্যে পড়ে৷ কর্মী ও কোম্পানির আয়ের খাতিরে আমাদের মুনাফার প্রয়োজন রয়েছে ঠিকই৷ কিন্তু মানুষ ও প্রকৃতির স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে আমরা মুনাফা করতে চাই না৷’’

অর্থাৎ গোটা প্রক্রিয়ার সব ধাপই টেকসই পদ্ধতিতে সাজানো হয়েছে৷ প্রিন্টিং মেশিনই ভবনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে৷ সেখানে পানির রি-সার্কুলেশন প্রণালী রয়েছে৷ যন্ত্রগুলি কোনো কার্বন নির্গমনও করে না৷ ছাপার কাগজ ও রংয়েরও ‘ক্রেডেল টু ক্রেডেল’ সার্টিফিকেশন বা স্বীকৃতি রয়েছে৷

প্রচলিত ছাপাখানা থেকে টেকসই পদ্ধতিতে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত মোটেই সহজ ছিল না৷ রাল্ফ লোকাই বলেন, ‘‘এই পদ্ধতি মোটেই আরও ব্যয়বহুল নয়৷ কিন্তু সব কিছু নতুন করে সাজাতে হয়৷ উৎপাদনের প্রক্রিয়া নতুন করে সাজাতে হলে অবশ্যই অনেক বিষয়ের আমূল পরিবর্তন করতে হয়৷ একেবারে নতুন করে ভাবতে হয়৷”

গোটা প্রিন্টিং শিল্পক্ষেত্রই এই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে৷ গোটা বিশ্বে ফেলে দেওয়া কাগজের অর্ধেকের বেশি জঞ্জালের স্তূপে গিয়ে পড়ে৷ প্রতি বছর কাগজের উৎপাদনও বেড়ে চলেছে৷ কাগজ পুরোপুরি প্রকৃতিতে মিশে যেতে ২০ বছর পর্যন্ত সময় লাগে৷ সেই প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও মিথেন নির্গমন ঘটে৷ প্রিন্টিং প্রক্রিয়ায় অ্যালকোহল ও অন্যান্য রাসায়নিক কাগজ থেকে প্রকৃতিতে মিশে যায়৷

খুলনা গেজেট/কেএম

 




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!