খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ পৌষ, ১৪৩১ | ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

নড়াইলে মা-বাবা হারানো নাঈম ১২০ টাকায় পেলেন পুলিশে চাকরি

লোহাগড়া প্রতিনিধি

আমার বয়স যখন ৩ বছর তখন আমার বোন খুবই ছোট (হাঁটতে পারত না)। সেই সময় তখন আমার মা, আমাকে, বোন আর বাবাকে রেখে চলে যায়। আমার বাবার মাথায় সমস্যা ছিল। কিছুদিন পর বাবাও আমাদেরকে রেখে চলে যান। এরপর অনেক কষ্টে বড় হয়েছি। ছোটবেলা থেকে আমার দাদি, ফুফু, চাচা, চাচিরা আমাকে মানুষ করেছে। আজ আমি পুলিশে চাকরি পেয়েছি। আমার দাদি-ফুফুদের সকল কষ্ট সার্থক হয়েছে। ছোট বেলায় মা-বাবাকে হারিয়েছি, তারা যদি আজ থাকতো, অনেক খুশি হত। কিন্তু আফসোস তারা নেই। ছোট বেলায় মা-বাবাকে হারানো নাঈম ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়ে এভাবেই মনের কথা বলছিলেন।

নাঈম শেখ নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চরকোটাখোল গ্রামের মৃত কেরামত শেখের ছেলে। তিনি নিয়োগ প্রাপ্ত রিক্রুট ট্রেইনি কনস্টবল। নড়াইলে নাঈমের মতো আরও ২৬ তরুণ তরুণী মাত্র ১২০ টাকা খরচ করে পুলিশ কনস্টেবল (টিআরসি) হয়ে নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করেছেন।

বুধবার (২২ মার্চ) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে নড়াইল জেলা পুলিশ লাইন্স ড্রিলশেডে জেলা পুলিশের আয়োজনে তাদেরকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা পুলিশ।

অনুষ্ঠানে সভাপতি ও পুলিশ সুপার মোসা. সাদিরা খাতুন ও অনান্য পুলিশ কর্মকর্তারা নিয়োগপ্রাপ্ত সকলকে ফুল ও ক্রেস্ট বিতরণ করেন।

এসময় নিয়োগপ্রাপ্তরা এবং অভিভাকরা স্বচ্ছ নিয়োগের জন্যে পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানান। তারা বলেন, অনেকে বলে পুলিশে চাকরি পেতে টাকা লাগে, কিন্তু পুলিশে নিয়োগে কোনো টাকা লাগে না। এবার স্বচ্ছ নিয়োগ হয়েছে এজন্য আমরা জেলা পুলিশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

জেলা পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন বলেন, ‘চাকরি নয় সেবা’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে, স্মার্ট পুলিশ তৈরি করতে মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থী বাছাই করে নড়াইলে ২৭ পুলিশের চাকরি হয়েছে। পুলিশের চাকরি পেতে টাকা-পয়সা লাগে না। সন্তানের চাকরির জন্য অভিভাবকদের জমিজমা বিক্রি করতে হবে না। মাত্র ১২০ টাকায় খরচেই কনস্টেবল পদে পুলিশে চাকরির মধ্যে ১০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট এবং ২০ টাকার ফরম কিনেই হবে যোগ্য প্রার্থীর চাকরি হয়। মাত্র ১২০ টাকা খরচ করে স্বপ্ন পূরণ হলো নড়াইলের ২৭ তরুণ তরুণী।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রিয়াজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) এস এম কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিআইডি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ট্রেইনি কনস্টেবল পদে নিয়োগপ্রাপ্ত সকলে ও তাদের অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টরা।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!