পাঁচ দিনের পরিচয়। পরে শারীকি সম্পর্ক। শারীরিক সম্পর্কের সময়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শ্বাসরোধ করা হয় ভিকটিমকে। পরে লাশ গুমের জন্য ঘরে থাকা বটি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে ফেলে আবু বক্কর। নিজেকে আড়াল করার জন্য আবু বক্কার কথিত স্ত্রী স্বপ্না বেগমকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। গ্রেপ্তার ভয়ে গাজীপুর গিয়ে তারা অবস্থান নেয়। রোববার রাতে র্যাবের গোয়েন্দা জালে গ্রেপ্তার হয় আবু বক্কর। একইসঙ্গে আটক করা হয় তার কথিত স্ত্রী স্বপ্নাকে।
র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর হত্যাকান্ডের বিবরণ জানায় আবু বক্কর। পরে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক নগরীর গোবরচাকা এলাকার একটি সরু স্থান থেকে লাশের বিছিন্ন হওয়া দু’হাতের কবজি উদ্ধার করে র্যাব। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিহত নারীর পরিচয় নিশ্চিত করে র্যাব। ওই নারী হলেন সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলার কুতের বিল এলাকার জনৈক কালিপদ বাছারের মেয়ে কবিতা(২৯)।
ঘটনাস্থলের পাশে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেন র্যাব-৬ এর মূখপাত্র লে: কর্ণেল মোসতাক আহমদ। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের এ হত্যাকন্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আবু বক্কর তার কথিত স্ত্রী স্বপ্নাকে নিয়ে ১ নং গোবরচাকা ক্রসরোড জনৈক রাজুর বাড়িতে ৩ বছর ধরে বসবাস করছে। স্বপ্না তার বিবাহিত স্ত্রী নন। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই বাড়িতে তারা বসবাস করছে। স্বপ্না নগরীর প্রিন্স হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
৫ দিন পূর্বে ভিকটিম ও আবু বক্করের মধ্যে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্রে তাদের মধ্যে একাধিকবার কথা হয়েছে। এক সময়ে আসামি ভিকটিমকে তার ভাড়া বাড়িতে নিয়ে আসে। ওই রাতে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়।
এ সময়ে আসামি ভিকটিম কবিতাকে গলা নামিয়ে কথা বলার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু কবিতা সেটি না করে আরও উচু স্বরে কথা বলতে থাকে। উপায়োন্তু না পেয়ে আবু বক্কর তাকে শ্বাসরোধ করার জন্য নাক ও মুখ চেপে ধরে। পরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এরপর রান্নাঘর থেকে বটি এনে লাশটি গুম করার জন্য ধারালো বটি দিয়ে মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে। মাথা পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রাখে। পরে দু’হাতের কবজি কেটে ফেলে। দেহের বাকী অংশ একটি বক্সে ঢুকিয়ে রাখে।
রাতে নিজেকে গোপন করার জন্য আবু বক্কর কথিত স্ত্রী স্বপ্নাকে নিয়ে রূপসা নদী পার হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। সে সময়ে আসামি স্বপ্নাকে হত্যাকান্ডের বিষয়ে কোন কথা বলেনি। পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও গোয়েন্দা তৎপরতা চালায়। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে রোববার রাতে আসামি আবু বক্করের অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। রাতে তাকে ও তার কথিত স্ত্রীকে গাজীপুর জেলার বাসন থানাধীন চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিকে সোনাডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।