কোন এক গ্রামে বসবাস করত দুই ভাই। তাদের পিতা-মাতা বেঁচে নেই। বড়জন ছিল চালক আর ছোট জন বোকা। পিতা মারা যাওয়ার সময় রেখে গেছে একটি ঘর, একটি গরু, একটি কাঁথা ও একটি নারকেল গাছ। বড় ভাই বললো,
: এসো আমরা এসব ভাগা-ভাগি করে নেই।
: ঠিক আছে।
: আমি রাতে ঘরে থাকবো আর তুমি দিনে থাকবা।
: আচ্ছা।
: কাঁথা আমি রাতে গায়ে দিব আর তুমি দিনে দিবে।
: আচ্ছা।
: তুমি গরুর মুখের অংশ নিবে আর আমি পিছনের অংশ।
: আচ্ছা।
: আমি নারকেল গাছের মাথার অংশ নিব আর তুমি গোড়ার অংশ নিবে।
: আচ্ছা।
চালক ঘরের মধ্যে কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমালো আর বোকা সারা রাত খালি গায়ে বাইরে বসে মশা মারল। তারপর সকাল হলে বোকা কিছু সময় কাঁথা গায়ে দিয়ে শুইল কিন্তু ঘুম এলো না। উঠে গরুর জন্য ঘাস নিয়ে এলো। আর বড় ভাই একা সব দুধ খেল। বোকা নারকেল গাছের গোড়ায় পানি দেয় আর চালক একা নারকেল খায়। এমনিভাবে চলতে থাকে। বোকা কখনো বুঝতে পারল না বড় ভাই যে তাকে ঠকাচ্ছে। গ্রামের মানুষ দেখছে কিন্তু কেউ কিছু বলে না। ঐ গ্রামে এলো একজন ভালো মানুষ কয়েকদিন লক্ষ্য করার পর বড় ভাইয়ের চালাকি ধরতে পারল। একদিন বোকাকে বললো,
: তোমার কি ঘরে থাকতে ইচ্ছে করে না?
: করে।
: তোমার কি শীতের রাতে কাঁথা গায়ে দিতে ইচ্ছে করে না।?
: করে কিন্তু আমার তো দিনের ভাগে।
: তোমার কি গরুর দুধ খেতে ইচ্ছে করে না?
: করে। আমার মুখের অংশ।
: তোমার কি নারকেল খেতে ইচ্ছে করে না?
: করে। আমার তো গোড়া।
: শোন তুমি এখন গিয়ে কাঁথা ভিজিয়ে রাখবে। তোমার বড় ভাই যখন দুধ দোহন করতে যাবে তুমি মুখে মারবে। যখন নারকেল গাছে উঠবে তখব তুমি কুড়াল দিয়ে গোড়া কাটবে।
বোকা চালাক হয়ে গেছে। পুকুরে নিয়ে কাঁথা ভিজিয়ে রাখল। বড় ভাই যখন দুধ দোহন করতে এলো লাঠি দিয়ে মারল। গরু নড়া-চড়া করতে লাগল।
: কর কি?
: আমার মুখে আমি মারব।
: তোরে দুধের ভাগ দিবো।
যখন নারকেল পারতে গাছে উঠল। তখন গোড়ায় কুড়াল দিয়ে কোপ দিল।
: যা তোকে সমান ভাগ দিব।
খুলনা গেজেট/কেএম