খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড
  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে

দীর্ঘদিন বন্ধ আশাশুনি-ঘোলা সড়কের নির্মাণ কাজ, দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার আশাশুনি -ঘোলা ভায়া শ্রীউলা সড়কের নির্মাণ কাজ শুরুর পর বর্তমানে বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার ৫ ইউনিয়েন লক্ষাধিক মানুষ। কয়েক দিনে বৃষ্টিতে সড়কে কাদা হওয়ায় যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হাঁটাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম, সুদয় মন্ডল, গোপাল মন্ডল, আব্দুস সামাদ জানান, আশাশুনি- ঘোলা ভায়া শ্রীউলা সড়কটি উপজেলার খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ। এসড়কে প্রতিনিয়ত শতশত ভারী ও হালকা যানবাহন চলাচল করে।

আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা, প্রতাপনগর, আনুলিয়া, খাজরা ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী কালিগঞ্জ, শ্যামনগর, কয়রা উপজেলার মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে এ সড়কে যাতয়াত করে থাকে। কিন্তু সড়কটি সংস্কারের লক্ষ্যে ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে খুড়াখুড়ি করে রাখে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। এরপর দীর্ঘকাল কাজ না করায় গোটা এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

এলাকাবাসী আরও জানায়, ৩/৪ বছর আগে অনেক খড়কুটো পোড়ানোর এক পর্যায়ে সড়কটির কাজ শুরু হয়। কিন্তু সামান্য কিছু কাজের পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০২০ সালের সুপার সাইক্লোন আম্পান এবং ২০২১ সালের ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে সড়কটির নাকতাড়া বাজার থেকে ঘোলা পর্যন্ত প্রায় বিলীন হয়ে যায়। এছাড়া ওই সড়কের শ্রীউলা ও মহিষকুড় এলাকা সহ বেশ কয়েক স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর সকড়টি সংষ্কারের উদ্যোগ নেয় সড়ক ও জনপদ বিভাগ। কিন্তু খুড়ে রাখার পর আর কোন কাজ না করায় বৃষ্টির পানিতে পুরো সড়কটি কাদা কাদা হয়ে গেছে। যে কারনে চলাচলের একেবারে অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।

শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল বলেন, আশাশুনি শ্রীউলা সড়কটি সংস্কারে সরকার ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। সংস্কারের কাজও শুরু হয়। কিন্তু সড়কটি খুড়ে রাখার পর দীর্ঘিদিন কাজ না হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি বাড়তেই থাকে। বর্তমানে সড়কের মহিষকুড় মৎস্য সেট হতে নাকতাড়া পর্যন্ত অংশে অসংখ্য স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টির পানিতে সড়ক ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়ছে। কর্দমাক্ততার কারণে যানবাহন চলাচল ও পথচারীদের সড়ক পার হতে কেঁদে ফিরতে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মাইক্রো-বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে এ সড়কে। চিংড়ি এবং অন্যান্য পণ্য এই সড়ক দিয়ে পরিবহন করা হয়। তবে সংস্কারের অভাবে রাস্তাটি এখন মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা থেকে আশাশুনি-ঘোলা যাওয়ার রাস্তাটি ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ। সাতক্ষীরা -৩ আসনের এমপি অধ্যাপক ডাঃ এফ এম রুহুল হক সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ডিমান্ড অর্ডার (ডিও) চিঠি দিলে একনেকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কটি সংস্কারের জন্য দুটি প্যাকেজে ৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, এটি প্রথম শ্রেণির রাস্তা। প্রতিটি বাজার অঞ্চলে রাস্তার দু’পাশে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা রয়েছে। সাতক্ষীরা থেকে আশাশুনি-ঘোলার দূরত্ব ৪২ কিমি। এই সড়ক সংস্কারের জন্য ৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়ার পর সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দুটি প্যাকেজে রাস্তাটি শুরু করা হয়েছিল। একই রাস্তায় আশাশুনি থেকে ঘোলা পর্যন্ত সড়কটির কাজ শুরু হলে সুপার সাইক্লোন আম্পান ও ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফলে কাজ শুরুর পর তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত রাস্তাটির সংস্কার কাজ পুনরায় শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!