নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী চলতি বছরের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে ধাপে ধাপে শুরু হচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০২৪। ইতিমধ্যে এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। অনেকে ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। সর্বশেষ দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবারের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী উন্মুক্ত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে থাকছে না দলীয় প্রতীক। দলীয় প্রতীক না থাকায় এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দেশের অন্যান্য উপজেলার ন্যায় খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও নতুন কিছু প্রার্থীর সন্ধান মিলেছে। বিএনপি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে এদের মধ্যে রয়েছেন- বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মারুফুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মল্লিক মহিউদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক খুলনা জেলা পরিষদের সদস্য মোল্যা আকরাম হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক গাজীরহাট ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী হেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক দিঘলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা ফিরোজ হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ জাকির হোসেন।
বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক বা না করুক সেক্ষেত্রে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনের জেলা কমিটির সাবেক সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক গাজী এনামুল হাসান মাসুম। আর বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ মোজাম্মেল হোসেন প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে একজন প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যানের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আপাতঃ তিনি তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
২০১৯ সালের ২৮ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান খান নজরুল ইসলাম। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে শেখ মারুফুল ইসলাম খান নজরুল ইসলামকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবার খান নজরুল ইসলাম নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেটকে তিনি বলেন, প্রথমতঃ দল মনোনয়ন দিচ্ছে না। দ্বিতীয়তঃ আমার বয়স হয়েছে, শারীরিক কিছু সমস্যা আছে। আর তৃতীয়তঃ অর্থনৈতিকভাবে আমি খুবই দুর্বল। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন অনৈতিকভাবে ১টা পয়সাও ইনকাম করিনি। পরিষদে আমিসহ দু’ জন ভাইস চেয়ারম্যান অত্যন্ত স্বচ্ছতা এবং সততার সাথে কাজ করেছি। আমাদের সময় পরিষদে কোন দুর্নীতি হয় নাই। দীর্ঘদিন দলের সভাপতির দায়িত্বে থেকেও দল থেকে একটা পয়সা ইনকাম করতে পারেনি। গত নির্বাচনে আমেরিকা প্রবাসী ছেলের টাকা দিয়ে নির্বাচন করেছি। এবারও নির্বাচন করতে হলে তার কাছে টাকা চাইতে হবে। সব মিলিয়ে আমি নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ১১ জনের নাম শোনা যাচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আলী রেজা বাচা, যুবলীগ নেতা গাজী আলী বাকের প্রিন্স, সৈয়দ জামিল মোরশেদ মাসুম, রবিউল শেখ, খানজাহান আলী থানা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও দিঘলিয়া উপজেলা মুক্তিযুদ্ধের সন্তান প্রজন্ম কমিটির সাধারণ সম্পাদক গত উপজেলা নির্বাচনের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান রুপম, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তহিদ মিয়া, আসাদ খামারী, মো. বজলুর রহমান ফকির, জামায়াতে ইসলামীর মো. মুশফিকুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমাম হোসেন, মো. শহীদুল্লাহ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ মো. মিঠুনুর রহমান ।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য ৩ জনের নাম শোনা যাচ্ছে। এরা হলেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ শিরীন ময়না, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার ও নাসরিন আক্তার।
খুলনা গেজেট/এনএম