খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৭ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  সামিট গ্রুপের আজিজসহ পরিবারের ১১ সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
  সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার

দাকোপে ২৫ বিঘা জমির তরমুজ লুটের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার ৪ নং কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়নে জনৈক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে ২৫ বিঘা জমির তরমুজ কেটে লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে হামলা-মারপিট ও জীবনাশের হুমকি এবং মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দাকোপের ধোপাদী গ্রামের ফারুক মল্লিকের ছেলে হুমায়ুন কবীর মল্লিক।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, উপজেলার নায়দের খাল ধোপাদী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের বিলে আমার পিতা মোঃ ফারুক মল্লিক, গনেশ সরকার, খুলনার বসুপাড়া এলাকার এনাম আহমেদ ও রূপসার মুজিবর রহমানের ৩৫ বিঘা জমি রয়েছে। ক্রয় সুত্রে মালিকানা ওই জমি আমরা ভোগদখলে রয়েছি। অপরদিকে ওই জমি নিয়ে একই এলাকার আবুল খায়ের ও তপন মন্ডলের সাথে আমাদের বিবাদের জের ধরে প্রতিপক্ষরা আদালতে মামলা দায়ের করে। মামলায় বিজ্ঞ আদালত আমাদের পক্ষে রায় ঘোষণা করেন।

চলতি মৌসুমে ওই ৩৫ বিঘা জমির মধ্যে ২৫ বিঘা জমিতে আমরা তরমুজের আবাদ করেছি।

এদিকে গত (২৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯ টায় জনৈক প্রভাবশালী ব্যক্তির নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক লোকজন নিয়ে ১০টি পিকআপসহ আমাদের তরমুজের খেতে হাজির হন। তিনি রাস্তার উপর পিকআপগুলো দাঁড় করিয়ে লোকজন নিয়ে ক্ষেতে নেমে তরমুজ পিকআপে তুলতে থাকেন। আমি ও আমার লোকজন তাদের বাধা দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হত্যার নির্দেশ দেন। সাথে সাথে সশস্ত্র বাহিনী আমাকে ও আমার লোকজনদের ধাওয়া করলে আমরা দৌঁড়ে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পাই। এসময় আমার ডাক চিৎকারে গ্রামবাসী এবং আমার ক্ষেতের সেচ কাজে নিয়োজিত কর্মচারীরা ছুটে আসলে বিলাস মন্ডল ও রতন কুমার রায় অপর্ণা সরকারকে লোহার রড ও বাশের লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। তাকে উদ্ধারের জন্য আমেনা বেগম, ফাতেমা বেগম, ফাহিম বেগম ও পুতুল সরকার ছুটে গেলে তাদেরকে চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। গ্রামবাসীর উপস্থিতি বেশি হওয়ায় আমি ঘটনাস্থলে এগিয়ে গেলে একজন আমাকে আকস্মিক মুখে ঘুষি মারে। এতে আমার নিচের ঠোট ফেটে রক্তাক্ত জখম হয়।

একদিকে মারপিট অনদিকে জমির তরমুজ তুলে পিকআপে করে নেওয়ার প্রস্তুতি চলতে থাকে। একপর্যায়ে পিকআপ ভর্তি করে তরমুজ নিয়ে চলে যেতে থাকলে দাকোপ থানা পুলিশ ঘটনান্থলে পৌঁছে তরমুজ বোঝায় ৬টি পিকআপ আটক করে। এসময় ওই ব্যক্তি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দুইটি পিকআপ ছাড়িয়ে নেয়। তরমুজ বোঝায় বাকী ৪টি পিকআপ পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। ক্ষেত থেকে কেটে নেওয়া তরমুজের মূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা। এছাড়া তারা আমাদের ক্ষেতে থাকা ১ টি ইলেকট্রিক ও ৩টি ডিজেলসহ ৪টি ওয়াটার পাম্প মেশিন, ১২টি ড্রাম, ৩মণ সেচ পাইপ, ক্ষেত পাহারার ৪টি টর্চ লাইট নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার ৪০০ টাকা।

অপরদিকে ২৬ এপ্রিল সন্ধ্য ৬টা ২০ মিনিটে তাদের খোঁজ-খবর নেওয়া ও ওষুধ কিনে দেওয়ার জন্য যায়। হাসপাতাল থেকে আমার পিতা ফারুক মল্লিক, বেল্লাল মল্লিক, মোঃ নুরুল হক, দিলিপ ও আবুল হাওলাদারসহ হাসপাতলের বাইরে আসা মাত্র ওই বাহিনীর একজন এক হাত দিয়ে আমার পিতাকে জড়িয়ে ধরে এবং অপর হাত দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা টিপে ধরে। এসময় আরেকজন চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আমার পিতা ফারুক মল্লিকের মাথার বামপাশে সজোরে কোপ মারে। এসময় ওই বাহিনীর হামলায় গনেশ সরকার গুরুতর আহত হন। সাথে সাথে আমরা ধরাধরি করে আমার পিতাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় পরে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। বর্তমানে আমার পিতা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

এ ঘটনায় ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছি। অপরদিকে আসামী পক্ষ নিজেদের বাঁচাতে আসামী তপন মন্ডলকে বাদী করে আমাদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে কাউন্টার মামলা দায়ের করে হয়রানি করছে।

সংবাদ সম্মেলনে ওই বাহিনীর সকল সদস্যদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সেই সাথে আমাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মোঃ মুজিবর রহমান, এনাম আহম্মেদ, গণেশ সরকার, আবুল হাওলাদার, বেল্লাল মল্লিক ও শহিদুল ইসলাম।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!