খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে : ড. ইউনূস
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা

তেরখাদায় ডাবল মার্ডার মামলায় ৭ আসামীর জামিন বাতিল, আত্মসমর্পনের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনার তেরখাদা উপজেলার পহরডাঙ্গা এলাকায় পিতা-পুত্র হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেয়া সাত আসামীর জামিন বাতিল করেছে আদালত। তথ্য গোপন করে জামিন আবেদন পুনঃশুণানী শেষে এ আদেশ দেন হাইকোর্ট। আগামী দশদিনের মধ্যে আদালতে আত্মসমার্পনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আজ রবিবার (৪ অক্টোবর) বিচারপতি মোঃ রেজাউল হক ও বিচারপতি মোঃ আতোয়ার রহমানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ শুনানি করেন।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ৭টার খবরে বেসরকারি টেলিভিশন ‘চ্যানেল টোয়েন্টিফোর’ও বিশেষ প্রতিবেদন সম্প্রচারের সাথে সাথে খুলনা গেজেটে ‘পিতা-পুত্র হত্যায় স্বীকারোক্তি দেয়া আসামীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রকাশ্যে!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। ঘটনাটি খুলনাসহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি উচ্চ আদালতে ওই মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান দ্বীন ইসলামের পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেয়া আসামীরা জামিনে মুক্তি পেয়েছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে। তখনি আদালতের নজরে আসে বিষয়টি। আদালতের ভুল তথ্য দিয়ে জামিনে মুক্তিলাভ করে বলে অভিযোগ উঠে।

আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়া জামিনপ্রাপ্তরা হল- সাইফুল শেখ, খালিদ শেখ, আব্দুর রহমান, জমির শেখ, হোসেন শেখ, এস্কেন শেখ ও আইয়ুব শেখ। এরমধ্যে সাইফুল, খালিদ, আঃ রহমান ও জমির শেখ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দীতে আদালতকে জানিয়েছিল- স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এসএম দ্বীন ইসলামের নির্দেশে তারা পিরু শেখকে হত্যার উদ্দেশ্যে সেই রাতে গিয়েছিল। পিতাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসায় নাঈম শেখ খুন হয়। চাঞ্চল্যকর মামলাটিতে সম্প্রতি ওই সাত আসামী জামিন মুক্তি লাভ করলেও ইউপি চেয়ারম্যান এসএম দ্বীন ইসলাম এখনো কারাগারে। ফলে বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন, মামলার মূল এজাহার পরিবর্তন করে জালিয়াতি চক্র নিজেরাই একটি এজাহার তৈরি করেন। তৈরি করেছেন নিম্ন আদালতের আদেশের অনুলিপি। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি তারা হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেটি প্রত্যাহার (রিকল) করা হয়। আর যিনি আসামিদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন তাকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তার মোবাইল বন্ধ।

প্রসঙ্গত্ব, ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট রাত সাড়ে ৩টার দিকে তেরখাদার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের পহরডাঙ্গা গ্রামে জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরধরে নাঈম শেখকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এঘটনার পরদিন ৮ আগস্ট নিহতের মা মাফুজা বেগম বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২জনের বিরুদ্ধে তেরখাদা থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই ঘটনায় গুরুতর জখম নাঈমের পিতা পিরু মিয়া শেখ (৫৫) আড়াই মাস পর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে মামলাটি ডবল হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

সূত্রমতে, গেল বছরের ২১ আগস্ট দুপুরে এমামলায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এসএম দ্বীন ইসলাম মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থ জোগানদাতাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরে আসামীদের স্বীকারোক্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত দা, বল্লম ও দুর্বৃত্বদের জুতা নাঈমের বাড়ির পেছনের খাল থেকে জুতা উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

খুলনা গেজেট/এআইএন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!