তালা প্রেসক্লাবের স্থাপনা উচ্ছেদ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ও রোজিনা ইসলামসহ সারাদেশে সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বেলা ১১ টায় তালা প্রেসক্লাব মোড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক প্রণব ঘোষ বাবলু।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সরদার মশিয়ার রহমানের পরিচালনায় মানববন্ধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রাক্তন ডেপুটি কমান্ডার মোঃ আলাউদ্দীন জোয়ার্দ্দার, মহিলা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও তালা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মৃণাল কান্তি রায়, সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম, জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রামপ্রসাদ দাশ, উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিরন্ময় মন্ডল, জাসদ নেতা দোবাশীষ দাস, উপজেলা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান, নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এস এম লিয়াকত হোসেন, সাবেক ইউপি সদস্য শেখ আক্কাজ আলী, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি গাজী জাহিদুর রহমান, সহ-সম্পাদক সব্যসাচী মজুমদার বাপ্পী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সেলিম হায়দার, কোষাধ্যক্ষ এমএ ফয়সাল, দপ্তর সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ রোকনুজ্জামান টিপু, সদস্য প্রভাষক নজরুল ইসলাম, অর্জুন বিশ্বাস, মোঃ নূর ইসলাম, মোঃ তাজমুল ইসলাম, মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, কাজী লিয়াকত হোসেন, সুমন রায় গনেশ, সাংবাদিক রিয়াদ হোসেন, সন্তোষ ঘোষ, মারুফ হোসেন, তাপস সরকার প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তালা প্রেসক্লাবের উক্ত স্থাপনা উচ্ছেদ করলে উপজেলায় কর্তব্যরত সাংবাদিকদের বসার মতো কোন জায়গা থাকবে না। এছাড়া দীর্ঘদিনের একটি ঐতিহ্যস্থান ও বহু ইতিহাসের স্বাক্ষী তালা প্রেসক্লাবটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। এ জন্য তারা সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট উচ্ছেদ প্রস্তাব বাতিল পূর্বক তালা প্রেসক্লাবের স্থাপনা উচ্ছেদ না করতে জোর অনুরোধ জানান। এ সময় প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সারাদেশে সাংবাদিক নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বক্তারা।
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে তৎকালীন সাতক্ষীরা মহাকুমা প্রশাসক কর্তৃক মৌখিক সম্মতিতে তালা মৌজার এসএ ১নং খাস খতিয়ানের ১৩১নং দাগের ও হাল ১১২৩ দাগে ০.৩৮৭ একর জমিতে তালা প্রেসক্লাবের পাকা ভবন, পরবর্তীতে আরও ৪টি সেমি পাকা ঘর নির্মাণ করা হয়। ৪টি ঘরের মধ্যে ১টি স্টোর রুম, যার স্টোর কিপার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন সরদার মোঃ গোলজার হোসেন, ১টি ক্লাবের কম্পিউটার রুম ও পত্রিকা অফিস যার দায়িত্বে সিনিয়র সাংবাদিক এমএ ফয়সাল, আর দু’টি প্রেসক্লাবের নৈমিত্তিক ব্যয় পরিচালনা জন্য জনৈক গনেশ দাশ ও আমজাদ হোসেন মোড়লের নিকট অস্থায়ী ভিত্তিতে ভাড়া দেওয়া রয়েছে। ওই স্থাপনা সমূহ দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতিষ্ঠিত রয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন তা জানেন।
বর্তমান জরিপে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ড এবং তালা প্রেসক্লাবের নামে নোট দেওয়া হয়েছে। তালা প্রেসক্লাব ওই স্থানে একটি অডিটোরিয়াম নির্মাণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। যার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে টাকাও বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্ত সম্প্রতি তালা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামের জনৈক আমিনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি গত ০৬/১২/২০২০ তারিখ তার ব্যক্তি স্বার্থে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে ভুল তথ্য উপস্থাপন করে একটি আবেদন করে।
ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ হতে উল্লেখিত সূত্রে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর পত্র প্রেরণ করেন। সে মোতাবেক জেলা প্রশাসনের দপ্তর হতে উল্লেখিত সূত্রে সহকারী কমিশনার (ভূমি) গত ইং ০৮/০৪/২০২১ তারিখে ০১/২০-২১ নং উচ্ছেদ প্রস্তাবসহ কেস নথি প্রেরণ করেছে। কিন্তু সেখানে সত্য গোপন করে তালা প্রেসক্লাবের দখল না দেখিয়ে ৪ জন ব্যক্তির নামে দখল দেখানো হয়েছে। এতক্ষণে প্রেসক্লাবের স্থাপনা উচ্ছেদ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছে প্রেসক্লাব ও তালাবাসীর পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। ইতিপূর্বে কয়েকবার জমি তালা প্রেসক্লাবের নামে বন্দোবস্ত গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের অফিসে আবেদন করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম