সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কুড়িকাহুনিয়াতে ট্রলার ডুবির ঘটনার ২১দিন পর নিখোঁজ শ্রমিক আব্দুল আজিজ মোড়লের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) রাত ৯ টার দিকে কপোতাক্ষ নদের কুড়িকাহুনিয়া ভাঙ্গন পয়েন্ট থেকে এলাকাবাসীর সহায়তায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মরদেহটি উদ্ধার করেন। রাতেই মরদেহটি তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নিহত আব্দুল আজিজ মোড়ল (৬৩) সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের পুইজালা গ্রামের মুন্সি মানিক মোড়লের ছেলে।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ গোলাম কবীর ট্রলার ডুবির ঘটনায় সব শেষ নিখোঁজ শ্রমিক অব্দুল আজিজ মোড়লের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চত করেন।
এর আগে ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ তিন শ্রমিকের মধ্যে গত ১৮ ফেব্র“য়ারি নিখোঁজ বাবর আলী সরদার (৪৫) ও ১৯ ফেব্রুয়ারি শফিকুল ইসলাম সানার (৪৮) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন জানান, রাত ৯টার দিকে প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়া ভাঙ্গন পয়েন্টে কপোতাক্ষ নদে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা তাকে খবর দেয়। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে এলাকাবসীর সহায়তায় কপোতাক্ষ নদ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে রাত ১০ টার দিকে শ্রীউলা ইউনিয়নের পুইজালা গ্রাম থেকে মনিরুল ইসলাম খোকা এসে মরদেহটি ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ তার পিতা আব্দুল আজিজ মোড়লের বলে সনাক্ত করে। এসময় আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ গোলাম কবীর এর সাথে কথা বলে তার নির্দেশনা অনুযায়ি মরদেহটি রাত ১১টার দিকে নিহতের ছেলে মনিরুল ইসলাম খোকাসহ তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। একই সাথে ট্রলার ডুবিতে নিহত আব্দুল আজিজ মোড়লের মরদেহ দাফনের জন্য আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নিহতের পরিবারের সদস্যদেরকে পাঁচ হাজার দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে কপোতাক্ষ নদের পাউবো’র বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে কুড়িকাউনিয়া এলাকায় বিশালাকৃতির খাল তৈরি হয়। গত ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে সেনা বাহিনীর তত্তাবধায়নে পাউবো’র নিয়োগকৃত ঠিকাদারের মাধ্যমে ভাঙ্গন পয়েন্ট মেরামতের কাজ চলছে। বিভিন্ন স্থানের শ্রমিকরা ঠিকাদারের অধীনে এই ভাঙ্গন পয়েন্ট গত আড়াই মাস ধরে কাজ করছে। মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টায় দিকে একটি ট্রলারে করে ১২ জন শ্রমিক বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজে যাওয়ার সময় ভাটার টানে স্রোতের মুখে পড়ে ভাঙ্গন পয়েন্টে ট্রলাটি ডুবে যায়। এসময় ট্রলারটিতে থাকা ১২ জনের মধ্যে নয়জনকে তাৎক্ষনিক উদ্ধার করা সম্ভব হলেও তিনজন নিখোঁজ থাকে। নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে গত ১৮ ফেব্র“য়ারি বাবর আলী সরদার (৪৫) ও ১৯ ফেব্র“য়ারি শফিকুল সানার (৪৮) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু আব্দুল আজিজ মোড়ল নিখোঁজ ছিলেন। ট্রলার ডুবির ২১দিন পর মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কপোতাক্ষ নদের কুড়িকাহুনিয়া ভাঙ্গন পয়েন্ট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হলো।