খুলনায় করোনা মোকাবেলায় পুলিশের ভূমিকা প্রশংসনীয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গত মার্চ মাস থেকে এখন অবধি মাঠে কাজ করছে নগর ও জেলা পুলিশ। লকডাউন কার্যকর করতে দিন-রাত মাঠে ছিল পুুলিশ। পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং মাস্ক পরতে বাধ্য করাতেও কখনও কখনও পুলিশের ভূমিকা ছিল কঠোর। তবে সার্বিক দিক থেকে জনগণকে সুরক্ষা দিতে করোনা মোকাবেলায় পুলিশের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট সাধারণ মানুষ।
এদিকে করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকে ১২ আগষ্ট পর্যন্ত খুলনা মেট্রো পলিটন (কেএমপি) এবং খুলনা জেলা পুলিশের ২৮০ জন সদস্য করোনা পজেটিভ হয়েছেন। এর মধ্যে পুলিশের এ্যাডিশনাল কমিশনার, এসপি, এএসপি, এসি, ওসি, এসআই, এএসআই, কনষ্টেবল সব ধরণের সদস্যই আছেন। তবে কোন পুলিশ সদস্যই প্রাণ হারাননি। গত জুলাইতে খুলনা রেঞ্জের এসপি সাজ্জাদ হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে নেওয়া হলেও বর্তমানে তিনি সুস্থ রয়েছেন।
কেএমপির সূত্রে জানা যায়, নগরীতে দায়িত্বরত অবস্থায় এখন পর্যন্ত ২১৯ জন পুলিশ সদস্য করোনা পজেটিভ হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৫২ জন। হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে ৩৬ জন এবং চিকিৎসারত ৩১ জন।
অপরদিকে জেলা পুলিশের সূত্র জানায়, তাদের মোট ৬১ জন সদস্য পজেটিভ হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন ৩৫ জন। পজেটিভ রোগীদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশ পরিদর্শক ৬ জন, এসআই ১৬ জন, এএসআই ১৩ জন, নায়েক ১ জন, কনষ্টেবল ২৪ জন এবং সিভিল স্টাফ ১ জন।
খুলনা জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ জানান, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে পুলিশ লাইন্সে অফিসার ও ফোর্স তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে এবং সরকার কর্তৃক প্রদত্ত প্রণোদনা সদস্যদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া জেলা পুলিশের প্রত্যেক সদস্যকে প্রয়োজনীয় মাস্ক, হ্যান্ড গ্লোবস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং পিপিই প্রদান করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের শরীরে ইমিউনিটি বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের উত্তম চিকিৎসা প্রদান ও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের আইসোলেশন এবং হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতসহ প্রয়োজনীয় ঔষধ দেওয়া হয়েছে।
কেএমপির পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রতিরোধ, চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং সঠিক পরিচালনার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। হাত ধোয়া, মাস্ক, স্যানেটাইজারের, পিপিইসহ পুলিশ সদস্যদের খাবার ও শারীরিক ব্যায়ামের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের জন্য বিভাগীয় হাসপাতালে করোনা ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়ার হচ্ছে। এমনকি পুলিশ সদস্যদের পরিবারকেও সচেতন থাকার জন্য ওষুধ, ভিটামিনযুক্ত খাবার, ডিম, দুধ ও ফলমূল সররাহ করা হয়।
খুলনা গেজেট/এআইএন