২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে টি-টোয়েন্টি সংস্করণ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় আরিফুলের। একই বছর অক্টোবরে ওয়ানডে ও নভেম্বরে টেস্ট অভিষেক হয় তার। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরেই জাতীয় দলের পক্ষে শেষ ম্যাচটি খেলেছেন আরিফুল। এরপর আর কোনো সংস্করণেই তাকে দলে নেওয়া হয়নি।
দলে নিজের অবস্থান নিয়ে আরিফুল বলেন, “আমাকে নিয়েছিলই কেন আর কেন বাদ দিয়েছিল তা আমার কাছেও অজানা। কী কারণে আমি জায়গা পেয়েছিলাম এবং কেন আবার বাদ পড়লাম তা আমি জানি না।”
আরিফুল টেস্ট খেলেছেন দুইটি। ২৯.৩৩ গড়ে করেছিলেন ৮৮ রান। সর্বোচ্চ ইনিংস হার না মানা ৪১ রান। বল হাতে একটি উইকেটও পেয়েছিলেন। আরিফুলের মতে টেস্টে তিনি ভালো করেও দলে জায়গা পাননি। তবে তিনি মনে করেন, হার না মানা ৪১ রানের ইনিংসটিকে অর্ধশতক বা শতকে পরিণত করতে পারলে হয়ত দলে টিকতে পারতেন।
আরিফুল বলেন, “ক্যারিয়ার আটকে গেছে কারণ হয়ত সুযোগ কম পেয়েছি। আমি এখন চিন্তা করি, যদি ওই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারতাম… দেখেন আমি দুইটা টেস্ট খেলেছি, একটা ইনিংসে ৩৯ করেছিলাম, আরেকটায় মনে হয় ৪১ (অপরাজিত) করেছিলাম। যদি ওইটা ৫০ বা ১০০ করতে পারতাম তাহলে হয়ত বাদ দিত না।”
ওয়ানডেতে আরিফুলকে নেওয়া হয়েছিল মাত্র একটি ম্যাচ। সেই ম্যাচে তিনি পাননি ব্যাটিংয়ের সুযোগ। তিন ওভার বোলিং করে ১৭ রান খরচ করলেও কোনো উইকেট পাননি। এখানে আরিফুলের সাথে অবিচারই হয়েছে। তবে টি-টোয়েন্টিতে ৯ ম্যাচে করেছেন ৫৯ রান ও নিয়েছেন কেবল একটি উইকেট।
তিনি বলেন, “ওয়ানডেতে ব্যাটিং-বোলিং কিছুরই ওভাবে সুযোগ পাইনি। টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ পেয়েছি। একটা খেলোয়াড়কে যখন আপনি দলে নিবেন তখন তাকে পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া উচিত। তারপর খেলোয়াড়টাকে বাদ দেওয়ার চিন্তা করতে পারেন। একজন খেলোয়াড় জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন নিয়েই ক্রিকেট খেলা শুরু করে। কিন্তু জাতীয় দলে ডেকেও যখন অল্প সময়েই বাদ দেওয়া হয় তখন খারাপ লাগা স্বাভাবিক।”
তবে এসব নিয়ে এখন আর ভাবেন না তিনি, “আপনি যত বেশি চিন্তা করবেন, মানসিকভাবে তত দুর্বল হয়ে পড়বেন। উল্টো একটা চাপ আসবে। তাই ওসব নিয়ে আর চিন্তা করিনি। ক্রিকেট যেহেতু খেলছি তাই ওই জায়গায় (জাতীয় দল) স্বপ্ন থাকবেই। ওই জায়গার স্বপ্ন না থাকলে ক্রিকেট খেলারই দরকার নেই। ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়া উচিত। বাকিটা নিজের চেষ্টা ও আল্লাহর ইচ্ছা।”
তবুও নিজের দুর্ভাগ্যকেও তুলে ধরেন, “হয়ত ক্রিকেটে ভাগ্যও লাগে। দেখুন আমি যখন আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক বল ছয় রান লাগত, আমার শটটা বাউন্ডারি থেকে ধরে ফেলেছিল। ভাগ্যেরও ব্যাপার আছে এখানে। ওটা সেদিন ছয়ও হয়ে যেতে পারত। ওখান থেকেও আমার ক্যারিয়ার গড়তে পারত। আসলে ভাগ্য ছাড়া হয় না।”
এছাড়াও আরিফুল দাবি করেন, চার-পাঁচ বছর আগের ক্রিকেটারদের চেয়ে এখনকার ক্রিকেটাররা দলে আসার পর বেশি সুযোগ পান।
তার ভাষ্যমতে, “এখনকার খেলোয়াড়দের দেখেন, টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি সব সংস্করণেই অনেক সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের ওই সময়ে সুযোগ কমই ছিল। শুধু আমি না, আরও খেলোয়াড় আছেন, যারা খুব কম সুযোগ পেয়ে দল থেকে বাদ পড়েছেন।”
খুলনা গেজেট/ এস আই