ঘনিয়ে আসছে ঈদ। সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শনিবারও উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে খুলনার মধ্যবিত্তের বাজার হিসেবে পরিচিত ডাকবাংলো নিক্সন মার্কেটে। পছন্দের পোশাক কিনতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরে বেড়িয়েছেন ক্রেতারা। তবে উচ্চবিত্তের নিউমার্কেট, দামি শপিংমলগুলোতে ক্রেতার ভিড় তুলনামূলক কম ছিল।
খুলনা বিপণি কেন্দ্র দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মাসুম ও খুলনা শপিং কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান জানান, এ বছর দেরিতে মার্কেট জমেছে। শুক্র ও শনিবার ছুটি থাকায় ভালো কেনাবেচার প্রত্যাশা করছেন তারা।
নগরীর ডাকবাংলো মোড় থেকে ভৈরব নদ, রেলস্টেশন থেকে সদর থানা পর্যন্ত এক বর্গকিলোমিটার এলাকায় রয়েছে ১৭টি মার্কেট। দোকান রয়েছে প্রায় ১০ হাজার। পুরো ডাকবাংলো এলাকাই মধ্যবিত্তের বাজার হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কেনাবেচা হয় ডাকবাংলো নিক্সন মার্কেটে।
মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের জনগণের কম দামে কাপড়ের চাহিদা মেটাতে আমেরিকা থেকে পুরোনো কাপড় আমদানি শুরু হয়। খুলনার রেলওয়ের জমিতে ওই কাপড় বিক্রি হতো। আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের নামে ওই এলাকার নাম হয়ে যায় নিক্সন মার্কেট। পরবর্তী সময়ে ডাকবাংলো মোড় ও নিক্সন মার্কেটকে কেন্দ্র করে আশপাশেও বিভিন্ন মার্কেট ও দোকানপাট গড়ে ওঠে। কম দামে ভালো পোশাক কিনতে এ মার্কেটের বিকল্প এখনও তৈরি হয়নি। মধ্যবিত্তের মার্কেট বলা হলেও এখানে ভিড় করেন উচ্চ থেকে নিম্ন আয়ের সবাই।
শুক্রবার ডাকবাংলো এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। ফুটপাত ও সড়ক দখল করে নতুন দোকান বসানো হয়েছে। এতে হাঁটার পথ সংকুচিত হয়ে গেছে। হেঁটে মার্কেটে প্রবেশ করতেই বেগ পেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। প্রতিটি দোকানই ক্রেতায় ঠাঁসা। ক্রেতা সামলাতে ব্যস্ত দোকানিরা কথা বলার ফুরসত পাচ্ছেন না।
পাঞ্জাবি বিতানের কর্মচারী রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর ১২-১৫ রোজার পর থেকেই কেনাকাটা জমে ওঠে। কিন্তু এ বছর ২০-২২ রমজান পর্যন্ত তেমন ক্রেতা ছিল না। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ক্রেতা আসতে শুরু করেছে। চাঁদরাত পর্যন্ত বিক্রি আরও বাড়বে বলে আশা করছি।
বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা সুলতান হোসেন বাড়ির ছোটদের জন্য কাপড় কিনতে এসেছেন। ভিড় ও গরমে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। এ বছর পোশাকের দাম বাড়তি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ডাকবাংলো মোড়ের সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখা গেছে উচ্চবিত্তের নিউমার্কেটে। সেখানে অধিকাংশ দোকান দেখা গেছে ক্রেতাশূন্য। নগরীর শিববাড়ি মোড়ের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমেও ক্রেতার উপস্থিতি ছিল কিছুটা কম।
নিউমার্কেটের খুলনা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সেলিম তারিক জানান, গরমের কারণে দিনের বেলা ক্রেতা কম থাকে। রাতে ভিড় বাড়ে। তবে অন্যান্য বছর এ সময় ভিড় বেশি হলেও এ বছর ক্রেতা কিছুটা কম।
খুলনা গেজেট/এএজে