যশোরের চৌগাছায় চাঞ্চল্যকর মাদরাসাছাত্রী শর্মিলা খাতুনকে (৯) ধর্ষণ করে হত্যা মামলার একমাত্র আসামি তজিবুর রহমানের ফাঁসির আদেশ ও একলাখ টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) নীলুফার শিরিন এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত তজিবর রহমান চৌগাছা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের ফকিরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা ও মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিলধলা রামকৃষ্ণপুর এলাকার দবির উদ্দিন দরবার আলীর ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল। এ রায়ে বাদীপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বলেও তিনি জানান।
ধর্ষণ ও হত্যার শিকার শর্মিলা খাতুন চৌগাছা উপজেলার ফকিরাবাদ গ্রামের হাফিজুর রহমান কালুর মেয়ে ও হাকিমপুর নূরানী মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২২ জুন সন্ধ্যায় শর্মিলা খাতুন প্রতিবেশী তৈমুর হোসেন খানের আম বাগানে আম কুড়াতে যায়। সন্ধ্যা পার হয়ে রাত মেয়ে বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা প্রতিবেশীদের বাড়ীসহ চারদিকে খুঁজাখুজি করতে থাকেন। ঘটনার ৪ দিন পর ২৬ জুন সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন খবর পায়, পাশের হাকিমপুর গ্রামের জামান মৃধার আমবাগানে একটি শিশুর পচাগলা মৃতদেহ পড়ে রয়েছে।
পরে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে শর্মিলা খাতুনের পরিহিত লাল হাফ প্যান্ট, হাত এবং পায়ের পাতা দেখে লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় নিহত শর্মিলার পিতা হাফিজুর রহমান কালু বাদী হয়ে ২৭ জুন চৌগাছা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এ ঘটনায় আটক তজিবর রহমান বাদীর সামনে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন শর্মিলাকে প্রথমে ধর্ষণ করে।
পরে এ কথা কাউকে না বলার জন্য অনুরোধ করা হয়। শর্মিলা রাজি না হওয়ায় গামছা দিয়ে মুখ চেপে হত্যা করা হয়। হত্যার পর শর্মিলার মৃতদেহ মেহগনি গাছের পাতা দিয়ে ঢেকে রেখে পালিয়ে যান তজিবর। পরে পুলিশ মেহেরপুরের গ্রামের বাড়ি থেকে তজিবর রহমানকে আটক করে।
২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা চৌগাছা থানার এসআই এস.এম আকিকুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামি দোষী প্রমাণিত হওয়ায় বৃহম্পতিবার তাকে ফাঁসির আদেশ ও এক লাখ টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দিয়ে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
খুলনা গেজেট / আ হ আ