যশোরের চৌগাছায় আশংকাজনকভাবে বেড়েছে শব্দ দূষণ। এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত কোন না কোনভাবে শব্দ দূষণ করে চলেছে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন থাকলে তা প্রয়োগ হচ্ছেনা অভিযোগ অনেকের। এর ফলে সব থেকে বেশি ক্ষতিরমুখে পড়ছে ছোট্ট শিশুরা। ভয়াবহ শব্দ দূষণ থেকে পরিত্রান পেতে উপজেলাবাসি প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সিমান্ত লাগোয়া উপজেলা চৌগাছায় দিন যত যাচ্ছে ততই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে অভিযোগ স্থানীয়দের। ছোট্ট এই শহরের প্রতিটি সড়ক সকাল থেকেই ছোটখাটো যানবাহনের দখলে চলে যায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে ওই সব বাহনের সংখ্যা। এসব বাহনের চালকরা বলাচলে সম্পূর্ণ অদক্ষ, তারা কোথায় কিভাব দাঁড়াতে হবে, হর্ণ বাজাতে হবে, যাত্রী উঠা নামানো করতে হবে কিছুই জানেন না। বাস ট্রাক থেকে শুরু করে ভারী যানবাহনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। হাসপাতাল, মসজিদ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব কিছুই সমান চালকদের কাছে। বিকট শব্দে হর্ণ বাজিয়ে সড়কে চলাচল করাই যেন এই চালকদের কাছে নিয়মে পরিনত হয়েছে।
এছাড়া অনেক কম বয়সী মোটরসাইকেল চালকরা মোটরসাইকেলের সাইলেঞ্জারের মুখে বাঁশি লাগিয়ে, অনেকে আবার খুলে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে সারা উপজেলা।
শব্দ দূষণে মেতে উঠেছে বিভিন্ন বে-সরকারী হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলো। কে কত বেশি প্রচার প্রচারণা চালাবে এই নিয়ে তাদের মধ্যে চলে প্রতিযোগীতা। তাদের ব্যবহৃত মাইকের শব্দে বাজার কিংবা গ্রামের মানুষ নাজেহাল। শুধু তাই না চৌগাছা বাজারের মুরগী ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ইঁদুর মারার ওষুধ বিক্রেতা এমনকি ভিক্ষুকরাও মাইকে প্রচার চালিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন।
নছিমন, করিমন, আলমসাধু ইটভাঙ্গা মেশিন সব কিছুই চলে স্যালো চালিত ইঞ্জিনে। এসব বাহনের অধিকাংশ চালকই অদক্ষ। পথচারিরা বলেন, নছিমন করিমন ও ইটভাঙ্গা মেশিনের চালকরা বাহনে শব্দ বের হওয়া যন্ত্রটি খুলে রেখে সড়কে চলাচল করে। এর ফলে শব্দ কয়েক গুন বেড়ে যাই, অনেকে ভয়ে দ্রুত তাদের সাইড দিয়ে দেয়।
নানাভাবে চৌগাছায় শব্দ দূষণে মেতে উঠেছে অসাধু ব্যক্তিরা। এরফলে সাধারণ মানুষ যেমন শ্রবণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার ঝুঁকিতে রয়েছেন, সেই সাথে মানষিক স্বাস্থ্যের উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শব্দ দূষণ দুশ্চিন্তা, অবসাদ, উদ্বিগ্নতা, নিদ্রাহীনতা বাড়িয়ে দেয় বলে অভিমত বিশ্লেষকদের।
হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালতের আশপাশে নিরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবল শব্দমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। কিন্তু সেটা মেনে চলা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও এসব ব্যাপারে একেবারেই নীরব। শব্দ দূষণের ভয়াবহ এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ দাবি করেছেন উপজেলার সচেতন মহল।
খুুুুলনা গেজেট/ টি আই