যশোরের চৌগাছা উপজেলার প্রধান ভুমি অফিসে সেবারমান বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভুমি) গুঞ্জন বিশ্বাসের আন্তরিকতায় এটি সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন তার সহযোগী ও ভুক্তভোগীরা।
ভূমি অফিস মানেই যেন দালাল আর ঘুষের আতুর ঘর এমনটিই মনে করতেন সীমান্তবর্তী উপজেলা চৌগাছার মানুষ। এই অফিসে কাজে এসে দিনের পর দিন, তারপর মাস এমনকি বছর পার হয়েছে এমন নজির বহু আছে জানালেন সেবা নিতে আসা চৌগাছার পুড়াহুদা গ্রামের বয়োবৃদ্ধ আব্দুল মান্নান।
তিনি বলেন, আগে একটি নামজারির জন্য আবেদন করে চাতক পাখির মত অপেক্ষায় থাকতে হতো কবে ডাক পড়বে। ডাক হলে নানা সমস্যা দেখিয়ে আবার বিলম্ব, এরপর কিছু পয়সা খরচা করলেই মিলেছে কাংখিত সেবা। কিন্তু বর্তমান অফিসারের আমলে এই সকল সেবা যেন আমাদেরকে ডাকছে তোমরা আসো সেবা নাও। মানুষ ভিষন সন্তোষ্ঠ কাজে এসে।
মঙ্গলবার ভুমি অফিসে যেয়ে দেখা যায়, সেবা গ্রহিতাদের উপচে পড়া ভিড়। প্রত্যেকে কোন অনুমতি না নিয়ে ঢুকে পড়ছেন অফিস কক্ষে। অনুমতির তো প্রয়োজন নেই কারন নতুন ভুমি কর্মকর্তা অফিসের সিড়ি বা দেয়ালে লিখে দিয়েছেন অফিস কক্ষে ঢুকতে বা বসতে কোন অনুমতি লাগবে না। প্রয়োজনে মোবাইল করুন এ ধরনের অনেক লেখা শোভা পাচ্ছে এই কর্মকর্তার অফিসের চারিপাশে।
সেবা নিতে আসা উপজেলার বাঘারদাড়ি গ্রামের জালাল উদ্দিন বলেন, নাম সংশোধন করতে এই অফিসে এসেছি। বহু আগে একই কাজের জন্য আবেদন করে ঘুরেছেন কিন্তু মেলেনি সেবা। তিনি বর্তমান কর্মকর্তার গল্প শুনে সকল কাজ ফেলে ছুটে এসেছেন ভুমি অফিসে। বয়োবৃদ্ধ এই ব্যক্তি বলেন, স্যার আমার কথা গুলো সুন্দর ভাবে শুনে সমাধান দিয়েছেন আমি খুশি।
উপজেলার বলিদাপাড়া গ্রামের কৃষক মুকুল হোসেন এসেছেন নামজারির জন্য, সকল কাগজপত্র কর্মকর্তা নিজে দেখে আবেদন করতে বলেন পাশাপাশি দুই সপ্তাহ পর দিন দিলেন ওই দিনেই তার কাজ সম্পাদন হবে বলে জানিয়ে দিলেন।
একই কাজে এসেছেন চৌগাছা মডেল স্কুল পাড়ার মাহাবুব কবিরের ছেলে রিফাত হোসেন। তিনি বলেন, এইবার দিয়ে আমি তিনটি কাজ করেছি এই স্যারের কাছে। যা সারা জীবন মনে রাখার মত। এই অফিসার অন্য অফিসারের চেয়ে ভিন্ন। দেশের প্রতিটি অফিসের বস যদি এমনটি হতো তাহলে দেশ আরও এগিয়ে যেত মন্তব্য তার।
তবে একাধিক সেবা গ্রহিতা বলেন, উপজেলার বেশ কিছু ইউনিয়নের ভুমি কর্মকর্তাগণ চরম বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের কাছে গ্রামের মানুষগুলো জিম্মি। সহকারী কমিশনার মহোদয়ের এতো ভাল কাজ অনেক সময় অসাধু ওই সব নায়েবদের কারনে মলিন হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ২০২২ সালের জুনের শেষ দিকে তিনি চৌগাছায় যোগদান করেন। তারপর হতে এই অফিসের সমস্যা কোথায় কিভাবে তা সমাধান করা যায় সেটি নিয়ে কাজ শুরু করেন। বিশেষ করে নামজারি, ভুমি উন্নয়ন কর আদায়, মিসকেস সহ বেশ কিছু বিষয়ে আমরা ব্যাপক সাফল্য পেয়েছি। এটি সম্ভব হয়েছে সকলের আন্তরিকতা আর আমাদের চেষ্টা। মানুষের সেবার মনোভব নিয়ে এই চেয়ারে এসেছি এবং যথাযথ ভাবে সেটি মানুষকে দেয়ার চেষ্টা করে যাাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু কিছু নায়েবদের বিষয়ে অভিযোগ আছে বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়েছি।
খুলনা গেজেট/এএজে