কেউ বলছেন মাছটি দেখতে গজার মাছের মতো, কেউ বলছেন গবি মাছ, আবার কেউ বলছেন বেলে মাছের মতো দেখতে। এমনই এক ‘অচেনা মাছ’ ধরা পড়েছে গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমী ইউনিয়নের গোলাঘাট এলাকায় মো. আবু তালেব নামের এক মাছচাষির ঘেরে। এলাকার জেলে থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও এ মাছ দেখে চিনতে পারেননি। আজ রোববার সকালে মাছটি ধরার পর খবর পেয়ে আবু তালেবের মাছের ঘেরে ভিড় করছেন স্থানীয় মানুষজন।
গোলাঘাট এলাকার বিলের একপাশে ঘের তৈরি করে দুই যুগ ধরে মাছ চাষ করছেন আবু তালেব। তিনি বলেন, ঘের খনন করার জন্য পানি সেচে ফেলা হচ্ছে। অল্প পানিতে সব মাছ ধরতে জাল ফেলা হয়। জাল টেনে পাড়ে তুলতেই অন্য মাছের সঙ্গে উঠে আসে অদ্ভুত এই মাছ।
মাছচাষি আবু তালেব বলেন, ‘এমন মাছ আমি আর কখনো দেখিনি। বিচিত্র এই মাছ গ্রামের বয়স্ক লোকেরাও চিনতে পারছেন না। আমি মাছটি যত্নসহকারে জিইয়ে রেখেছি। মাছ বিষয়ে গবেষণা করতে চাইলে বিশেষজ্ঞ যে কাউকে এটি আমি দিয়ে দেব।’
সরেজমিন দেখা যায়, বড় মাছের ঘের থেকে পানি সেচে খননের কাজ চলছে। ঘেরের পাড়ে মানুষের জটলা। একটি বড় সিলভারের পাতিলে পানিতে জিইয়ে রাখা অদ্ভুত চেহারার মাছ দেখতে সেখানে কৌতূহলী মানুষেরা ভিড় করছেন।
কাছে গিয়ে দেখা গেল, মাছটির বিশাল আকারের মুখ, শরীরের রং দেখতে কিছুটা কালচে। গায়ে হলুদ রঙের ছোপ ছোপ দাগ। মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত গায়ের রং একই ধরনের। বুকের পাশে রং কিছুটা সাদাটে। চোখের পেছনেই একজোড়া ছোট আকৃতির পাখনা। পুরো মুখেই ধারালো ছোট ছোট দাঁতের সারি। শরীর অপেক্ষাকৃত নরম। খুবই শান্ত প্রকৃতির মাছটির ওজন পৌনে দুই কেজি।
গোলাঘাট গ্রামের ৭০ বছর বয়সী জেলে কবির হোসেন বলেন, মাছটি দেখতে কিছুটা গজার মাছের মতো। তবে এর শরীর একদমই নরম। এমন মাছ তিনি আর দেখেননি।
কাপাসিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আশরাফ উল্লাহ বলেন, এটি গবি মাছ বলে মনে হচ্ছে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ বেশ কিছু দেশে এ মাছ পাওয়া যায়। এটা ২৫ থেকে ২৬ ইঞ্চি লম্বা হয়।
মাছের ছবি দেখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান বলেন, দেখে মনে হচ্ছে, এটি বেলে গোত্রের কোনো মাছ হতে পারে।
খুলনা গেজেট/এমএম