খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাস-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুইজন নিহত
  মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭
  সাবেক প্রধান বিচারপতির মৃত্যুতে আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ বন্ধ

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে খুলনা হর্টিকালচার

বাপী দে

নতুনভাবে ঘুরে দাড়াচ্ছে উদ্যান ফসলের আবাদ ও উৎপাদন সম্প্রসারণে প্রতিষ্ঠিত সরকারি প্রতিষ্ঠান খুলনা হর্টিকালচার সেন্টার। দীর্ঘ ছয় দশকের বেশী স্বল্পমূল্যে দেশী-বিদেশী ফুল,ফল, ওষুধি গাছের উন্নতমানের চারা-কলম ও বীজ করছে। পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসের জন্য নতুনভাবে মাশরুম চাষ সম্প্রসারণে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এসব কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে চলতি অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ১৭ লক্ষাধিক টাকার বেশী রাজস্ব আয় করেছে হর্টিকালচার সেন্টার। পুরো অর্থ বছরে রাজস্ব আয়ে বিগত সময়ের রেকর্ড হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, সেন্টারটির অভ্যন্তরে মাটি ভরাট, পাকা ড্রেন ও নতুন কিছু অবকাঠামো নির্মাণ করলে জলবায়ূ পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকরা রাখতে পারবে।

।। স্বল্পমূল্যে মিলছে সূর্য ডিম, ব্লাক স্টন, ব্রুনাইটিং, মিয়াজাকি, বেনানা,

বারি-৪,  চিয়াংমাই, রেড পালমার আমের জাত।।

হর্টিকালচাল সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬২ সালে খুলনার দৌলতপুরে ১৬ একর জমি নারিকেল ও সফেদা বাগান নির্ভর হর্টিকালচার সেন্টারের কাজ শুরু হয়। ১৯৭৩-৭৪ সালে সেন্টারটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীন চলে আসে। ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে ভূমি পুনর্বিন্যাস ও সম্প্রসারণে সেন্টারটির জমির পরিমাণ দাঁড়ায় ২৯ দশমিক ২৩ একর। এরমধ্যে ১০ একর জমিতে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়। বর্তমানে ১৯ দশমিক ২৩ একর জমিতে সেন্টারের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সেন্টার অভ্যন্তরে গড়ে তোলা হয়েছে রাবি উদ্ভাবিত বিভিন্ন ফলে মাতৃবাগান, ড্রাগন মাতৃবাগান, বারোমাসী কাঠাল-সজনে বাগান, বিভিন্ন প্রজাতির চারার বীজতলা, ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন পয়েন্ট, দেশী-বিদেশী বিভিন্ন আম, জাম, পেয়ারার নতুন চারা প্রস্তুত কার্যক্রম। মাশরুম চাষে উৎসাহিত করতে প্রশিক্ষণ, স্পন তৈরী ও কৃষকদের মধ্যে মাত্র ১৭ টাকায় স্বল্পমূল্যে বিক্রি করছে। রয়েছে বারি উদ্ভাবিত নতুন জাতের ড্রাগনের মাতৃ বাগান।

খুলনা হর্টিকালচারে মাত্র ৬০টায় মিলছে দেশী-বিদেশী প্রজাতির আম সূর্য ডিম, ব্লাক স্টন, ব্রুনাইটিং, মিয়াজাকি, বেনানা, বারি-৪, চিয়াংমাই, রেড পালমার। ৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে সিডলেস কাগুজি লেবু, বারি ৩, ৪, ৫ ও ৬ বাতাবি লেবু। ভিয়েতনামি বাতাবি লেবু ও মাল্টা, ডার্জেলিং কমলা, পেয়ারা, জাম কলম বিক্রি হয় ৪০টাকায়। স্থানীয় নার্সারিগুলিতে এসব চারার দাম কয়েকগুন। বারোমাসী কাঠাল-সজনে এখানকার অন্যতম আকর্ষণ।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী দিন দিন সেন্টারটি থেকে রাজস্ব আয় বাড়ছে। এরমধ্যে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর ২০ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩০ টাকা, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ২৫ লাখ ৬০ হাজার ৯৫৯ টাকা, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ২০লাখ ৯৪ হাজার ৬৫৭, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ২২ লাখ ৪১ হাজার ৬৫৯ টাকা, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ২০ লাখ ৩৯ লাখ ৯৬২ টাকা ও সর্বশেষ ২০২০৩-২০২৪ অর্থবছরে প্রথম সাত মাসে ১৭ লাখ ৯৪ টাকা।

উদ্যান তত্ত্ববিদ সুজিৎ মন্ডল জানান, জলবায়ূ পবির্তন মোকাবেলা করে হর্টিকালচার সেন্টার কাজ করছে। এখানে লবণের প্রভাব রয়েছে। আমরা সেগুলো মোকাবেলা করে কাজ করছি। কৃষক ও আগ্রহী ব্যক্তিরা এখানে স্বল্প ফল-ফলাদির চারা সংগ্রহ ও চাষ বিষয়ে পরামর্শ পেতে পারেন।

খুলনা হর্টিকালচারের উপ পরিচালক সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, ‘আমরা সর্বাত্মকভাবে ফলজ কৃষিজ উন্নয়নে কাজ করছি। আগ্রহী বৃক্ষপ্রেমীরা এখানে যত বেশী আসবেন তত সম্ভাবনা তৈরী হবে। শুধু চারা দিয়েই নয়, চাষাবাদের পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। তবে হর্টিকালচার সেন্টারটি আরো আধুনিক করে তোলা দরকার। অভ্যন্তরিন রাস্তা, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন জরুরী। ইতিমধ্যে তিন একর ভুমি ও অবকাঠামো উন্নয়নে ১০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে হর্টিকালচার সেন্টারটি অযুত সম্ভাবনা হয়ে দেখা দেবে।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!