গোপালগঞ্জের ক্লুলেস ও লোমহর্ষক রুবেল হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব। এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তারা দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার তাদের ঢাকার গাজীপুর জেলা থেকে আটক করে র্যাব।
আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, তেরখাদা উপজেলার হুসাইন ইমাম ও গোপালগঞ্জের এস এম ফেরদাউস।
র্যাবের পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা গেছে, অতিলোভী ও দুস্কৃতিকারাী চক্র দেশের বিভিন্নস্থানে নানাবিধ অনৈতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে আসছিলো। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমনের উদ্দেশ্যে যায়। ফিরে আসার সময় গাড়ী ভাড়া করে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট গন্তব্যে নিয়ে যায়।
এরপর গাড়ীর চালককে মারধরসহ হত্যা করে গাড়ী ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অন্যত্র বিক্রয় করে বিপুল পরিমান অর্থ উপার্জন করে। এমনি একটি ক্লুলেস ও লোমহর্ষক হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে।
ব্যাপারে মুকসুদপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। ঘটনা পর থেকেই র্যাবের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও ছায়াতদন্ত চলমান ছিলো। র্যাবের তথ্যপ্রযুক্তি, গোয়েন্দাবৃত্তি ও দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এই ক্লুলেস হত্যাকান্ডটির রহস্য উন্মোচন করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ২ নভেম্বর রাতে গাজীপুর হতে এ ঘটনার মূলহোতা হুসাইন ইমাম ও এস. এম ফেরদাউস গ্রেপ্তার করে।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা গাড়ির চালক রুবেল হত্যাকান্ডের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। হত্যাকান্ডের বর্ণনা দেয়।
ইতিপূর্বে আসামীরা অস্ত্র, দস্যুতা ও প্রতারণাসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ায় জেলখানায় তাদের পরিচয় হয়। সেখানে থেকেই গাড়ি ছিনতায়ের প্রাথমিক পরিকল্পনা করে তারা।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামীরা ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে গাজীপুরে একত্রিত হয়। একটি হোটেলে ঘটনাটির চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে। ১৫ অক্টোবর তারা একত্রিত হয়ে পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
পথিমধ্যে চেতনানাশক ঔষধসহ একটি সিরিঞ্জ ক্রয় করে। তারা কুয়াকাটায় ভ্রমন শেষে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে নতুন ও ব্যয়বহুল গাড়ীর সন্ধান করতে শুরু করে। দুষ্কৃতিকারী চক্রটি একটি নতুন মডেলের ব্যয়বহুল প্রাইভেট কার ভাড়া করে। ১৬ অক্টোবর রাত ৯ টার দিকে কুয়াকাটা হতে গোপালগঞ্জ জেলার ভাটিয়াপাড়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
চালকের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ আলোচনা করে গাড়ীর মালিক ও গাড়ীতে ব্যবহৃত ট্রাকিং ডিভাইসটির তথ্য সংগ্রহ করে। গাড়ীটি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তারা চালকের সংঙ্গে ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে পড়ে।
একপর্যায়ে গাড়ীটি থামিয়ে কৌশলে চালকের দেহে চেতনানাশক ঔষধ প্রয়োগ করে। চালক দুর্বল হয়ে পড়লে তাকে মারধর করে হাত-পা স্কসটেপ দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং মুখমন্ডলে স্কসটেপ পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
পরবর্তীতে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের একটি নির্জন এলাকায় চালকের লাশটি ফেলে দিয়ে তারা গাড়ীটি নিয়ে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায়।