খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন রোববার। শনিবার দুপুরে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবিতে খোকন ও শহিদ পরিষদ সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে সাইফুল ও তারা পরিষদ সংবাদ সম্মেলনে প্রতিপক্ষ পরিষদের দাবিকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলেছেন।
শনিবার দুপুর পৌনে ১ টার দিকে আইনজীবী সমিতির বাইরে রাস্তার ওপর সংবাদ সম্মেলন করে খোকন ও শহিদ পরিষদ। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি গাজী আব্দুল বারি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আইনজীবী সমিতি প্রতি বছর নির্বাচন স্বচ্ছ সুন্দর আনন্দমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। পূর্বসূরীরা সমিতির গঠনতন্ত্রে নির্বাচনের কিছু আচারণবিধি যুক্ত করে গেছেন। যা লঙ্ঘন করলে প্রার্থীতা বাতিলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা আছে, কোন আইনজীবীর বাড়িতে বা সমিতি ভবনের বাইরে কারও চেম্বারে ভোট প্রার্থনা করতে যাওয়া যাবেনা। কোন পোষ্টার বা বিল বোর্ড প্রদর্শন করা যাবে না। আইনজীবী ব্যতিত কেউ অতিথি হিসেবে প্রজেকশন মিটিং এ উপস্থিত থাকতে পারবে না। সমিতির মধ্যে বা বাহিরের কোন প্রার্থী কোন উপঢৌকন প্রদান করতে পারবে না। কোন দলীয় বা গোষ্ঠীর নামে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন অনুষ্ঠান বা সভা আহবান করতে পারবে না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আইনজীবী সমিতি ২০২৩ এর বার্ষিক নির্বাচনে বর্তমান সভাপতি মো: সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক তারিক মোহাম্মাদ তারা নিজেদের ইচ্ছামতো মো: লিয়াকত আলী মোল্লাকে চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। নির্বাচন আচারণবিধি লংঘন করে তারা সমগ্র আদালত চত্বরে বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেষ্টুন ও গেটসহ সমিতির নির্বাচনকে ট্রেড ইউনিয়নের নির্বাচন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সভাপতির চেম্বার থেকে মূল্যবান স্যুটপিচ ও নগদ টাকা সকলের সামনেই বিলি করা হচ্ছে। যা আইনজীবীদের সম্মানকে ধুলোয় লুন্ঠিত করেছে।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, গত এক মাস ধরে প্রতিপক্ষ প্রতিটি ওয়ার্ডে ও উপজেলায় নৈশ ভোজের আয়োজন করে। যা নির্বাচনী আচারণবিধি লংঘন। যা নির্বচন কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে আমরা লিখিত আকারে পাঠিয়েছি। তিনি এর কোন পদক্ষেপ নেননি। তিনি এককভাবে সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। যা অত্যন্ত দু:খজনক ও নিরপেক্ষ প্রভাবমুক্ত সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় বলে তিনি মনে করেন।
রোববার সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত সমিতির ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথা অনুযায়ি নির্বাচনের সময় প্রার্থীগণ বাইরে অবস্থান করেন। যাতে ভোট স্বচ্ছ ও প্রভাব মুক্ত থাকে। কিন্তু তিনি উদ্বেগের সাথে বলেন, ২৪ নভেম্বর প্রতিপক্ষ পরিষদের সভায় একজন প্রার্থী নির্বাচনী সভায় ঘোষণা করেছেন যে ভোট চলাকালীন তিনি নির্বাচন কক্ষে অবস্থান করবেন। দম্ভ করে বলেন, কারও ক্ষমতা নেই তাকে সেখান থেকে সরানোর। এমন অবস্থা হলে তারা নির্বাচন থেকে সরে যাবেন। তারা নির্বাচন বয়কট ঘোষণা করবেন।
অপরদিকে দুপুর পৌনে ২ টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেন বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি প্রার্থী মো: সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আইনজীবী সমিতি একটি পেশাজীবী সংগঠন। এখানে কোন কারচুপি হয়না। নির্বাচনে পরাজয় জেনে তারা কুৎসা রটনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। প্রতিপক্ষ পরিষদ আইনজীবীদের সম্মান নিয়ে খেলা করছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জোয়ার্দ্দার খোকন-শহিদুল পরিষদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিচ্ছেন, নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন মামলার আসামিদের নিয়ে গভীর রাত অবধি সমিতিতে প্রচার কাজে অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। তারপরও আমারা চাই একটি সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক।
তিনি আরও বলেন, প্রতিপক্ষ পরিষদ দুপুরে সম্মেলনে যে অভিযোগ করেছেন তা ভিত্তিহীন। তারা সমিতির সুনাম ক্ষুন্ন করেছেন। প্রতিপক্ষ আমাদের দোষত্রুটি বের করছেন। তারা ২২ ও ২৩ নভেম্বর দু’টি প্যানেল পরিচিত সভা করেছেন। যা আচারণ বিধি পরিপন্থি বলে তিনি দাবি করেন। এছাড়া উপঢৌকনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও অমূলক। পরাজয় নিশ্চিত জেনে এ ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে তিনি সেখানে আরও অভিযোগ করেন। তিনি নির্বাচনে সকলের উপস্থিতি কামনা করেছেন।