খুলনা মহানগরীর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির আবেদন মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হবে। চলবে আগামী ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। শুধু অনলাইনে (https://gsa.teletalk.com.bd) আবেদন করা যাবে। সফটওয়্যার ব্যবহার করে অনলাইনেই লটারির কাজটি হবে।
করোনাভাইরাসের কারণে এবার বিদ্যালয় থেকে কোনো ভর্তি ফরম বিতরণ করা হবে না। ৩০ ডিসেম্বর অনলাইনে লটারির মাধ্যমে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) খুলনা সরকারি বিদ্যালয় ভর্তি কমিটি ২০২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির এ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
জানা গেছে, খুলনা মহানগরে অবস্থিত ১১টি বিদ্যালয়ে তৃতীয়, ষষ্ঠ এবং নবম শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিবেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত বছর স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীর আসন সংখ্যার বিপরীতে ভর্তির আবেদন পড়েছিল প্রায় ছয়গুণ। পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত সংখ্যক আসনে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়েছিল। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘প্রাত ও দিবা’ মিলে দুটি শাখা রয়েছে। খুলনার এই বিদ্যালয়গুলোতে এবার তৃতীয়, ষষ্ঠ এবং নবম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আসন রয়েছে মোট ১ হাজার ৯৪৫ টি।
ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও খুলনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ফারহানা নাজ খুলনা গেজেটকে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে আসন্ন শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়গুলোতে সব শ্রেণিতেই লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল আগেই। বাকি ছিল আবেদন ও লটারির তারিখ ঘোষণা। মাউশি ১৫ ডিসেম্বর থেকে আবেদনপত্র বিতরণ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দিয়েছিল। সে অনুযায়ী খুলনা মহানগরীর ১০টি সরকারি স্কুল ও একটি স্কুল অ্যাণ্ড কলেজে এবার তৃতীয়, ষষ্ঠ এবং নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করতে ৩০ ডিসেম্বর লটারির প্রস্তাব করা হয়েছিল। সেটাই গ্রহণ করেছে মন্ত্রণালয়। এছাড়া অন্যান্য শ্রেণির শূণ্য আসনের সংখ্যা দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মহানগরীতে ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দুটি শাখা ছিল। এবার জাতীয়করণ হওয়া আরও একটি স্কুল অ্যাণ্ড কলেজ যুক্ত হয়েছে। এগুলোতে মাউশির অধীন কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনায় ভর্তির কাজটি হয়। এবারও বিদ্যালয়গুলোকে তিনটি গুচ্ছ বা গ্রুপ (এ, বি এবং সি) করে ভর্তির কাজটি করা হবে। আবেদনের সময় একজন শিক্ষার্থী একটি গুচ্ছের পাঁচটি বিদ্যালয়ে ভর্তির পছন্দক্রম দিতে পারবে। এখান থেকে লটারির মাধ্যমে একটি বিদ্যালয় নির্বাচন করা হবে। এত দিন একজন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী একটি গুচ্ছের একটি বিদ্যালয়কে বেছে নিতে পারত।
সূত্রটি বলছে, আবেদনকারীরা আবেদনের সময় প্রতিষ্ঠান নির্বাচনকালে থানাভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা পাবে। তখন প্রার্থীরা প্রাপ্যতার ভিত্তিতে পছন্দক্রম অনুযায়ী সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয় নির্বাচন করতে পারবে।
গত বছর বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে খুলনা জিলা স্কুল, সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, সরকারি ইকবালনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে মোট ১ হাজার ১৮৮টি আসের বিপরীতে আবেদন করেছিল ৬ হাজার ৯৬ জন শিক্ষার্থী। ওই বছর প্রতি আসনে লড়ছে প্রায় ৬ জন করে। এছাড়া কেডিএ খানজাহান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি দৌলতপুর মুহসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সালাহউদ্দীন ইউসুফ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দেলদার আহমেদ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির চারটি স্কুলে মোট ৪৮০টি আসনের বিপরীতে পরিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৫১৩ জন। আসন প্রতি প্রতিদ্বন্দিতা করেছিল প্রায় ৫ জন শিক্ষার্থী। এ বছর নতুন করে যুক্ত হওয়া খুলনা সরকারি মডেল স্কুল অ্যাণ্ড কলেজে তৃতীয়, ষষ্ঠ এবং নবম শ্রেণিতে মোট ২৭৭টি আসন নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার নির্ধারিত সংখ্যক আসনে অনলাইনে লটারির মাধ্যমে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে।
খুলনা গেজেট / এআর