খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ইসি গঠনে সার্চ কমিটি ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে
  সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের তিন সহযোগী গ্রেপ্তার
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৪
  যাত্রাবাড়িতে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষে দুই পুলিশ আহত

খুলনায় ২৬ বছর পর কাশেম হত্যার বিচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, খুলনা শিল্প ও বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি শেখ আবুল কাশেম হত্যার প্রায় ২৬ বছর পর আবারও মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আগামী ২৬ জানুয়ারি মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছেন খুলনার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক (জেলা জজ) মো. সাইফুজ্জামান।

মামলার এক আসামির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের আদেশে ২০১৪ সাল থেকে আলোচিত হত্যা মামলাটির বিচার কার্যক্রম স্থগিত ছিল। গতকাল রোববার সেখান থেকে ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের চিঠি খুলনা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে আসে। এরপর ওই মামলার অবশিষ্ট কাযক্রম পরিচালনার জন্য আগামী ২৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন ওই আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান।

খুলনা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরিফ মাহমুদ বলেন, ‘আদালতের পাওয়া চিঠি অনুযায়ী উচ্চ আদালত ওই মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছেন ২০১৮ সালের আগস্টে। আর তাতে ওই আদালতের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষর করেছেন ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে ওই চিঠি খুলনায় আসতে এত দিন লেগেছে। আদালতের কাছে চিঠি আসার সঙ্গে সঙ্গে ওই মামলার কাযক্রম চালানোর জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।’

চাঞ্চল্যকর মামলাটির বাদী, প্রধান সাক্ষী, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুই আসামীর ইতোমধ্যে মৃত্যু হয়েছে। উচ্চ আদালতে কয়েকদফা স্থগিত আদেশের পর মামলাটির বিচার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হওয়ায় বিষয়টিকে ঘিরে আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে খুলনাবাসীর।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের ২৫ এপ্রিল দুপুরে খুলনা সদর থানার অদূরে স্যার ইকবাল রোড়ে বেসিক ব্যাংকের সামনে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গুলিতে শেখ আবুল কাশেম ও তার ড্রাইভার মিখাইল মারা যান। খুলনা থানায় মামলা দায়ের হলেও পরে মামলাটি তদন্তর দায়িত্ব পড়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ওপর। তারা দীর্ঘ তদন্ত করে ১৯৯৬ সালের ৫ মে ১০ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

এতে আসামী করা হয়, সৈয়দ মনিরুল ইসলাম (মৃত), তরিকুল হুদা টপি, আব্দুল গফফার বিশ্বাস, ইকতিয়ার উদ্দিন বাবলু (নিহত), ওসিকুর রহমান, মুশফিকুর রহমান, মফিজুর রহমান, মিল্টন ও তারেক।

আইনজীবীদের দেয়া তথ্যমতে, ১৯৯৭ সালের ৮ জুন বিচার কাজ শুরু হলেও দুই যুগেও শেষ হয়নি। বিচার কাজ শুরুর প্রথম দিনই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয় সিআরপিসি ৪৯৪ ধারামতে প্রজ্ঞাপনে অভিযোগপত্র থেকে কাজী আমিনুল হকের নাম বাদ দেওয়া হয়। বাদী পক্ষ এই প্রজ্ঞাপনের বিরদ্ধে না রাজী দিয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করলে প্রথম মামলার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। পরে কাজী আমিনুলকে বাদ দিয়ে বিচার কাজ শুরুর উদ্যোগ নেয় বাদীপক্ষ। এই সময় শিল্পপতি সৈয়দ মনিরুল ইসলাম নিজের অংশ বাদ রেখে বিচার চালানোর আবেদন করলে উচ্চ আদালত মামলার বিচার কাজ স্থগিত করে।

আরও জানা যায়, কয়েক দফা এভাবে মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকার পর ২০০৮ সালের ২৪ এপ্রিল খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে পুনরায় বিচার কাজ শুরু হয়। ওই সময় মোট ৩২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮জনের সাক্ষ্য হওয়ার পর ওই বছরের ২০ নভেম্বর মামলাটি নির্দিষ্ট সময় শেষ না হওয়াই জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইবুনালে ফেরত আসে। সৈয়দ মনিরুল ইসলামের পর আব্দুল গফফার বিশ্বাসের পক্ষে পরে ২০০৮, ২০০৯, ২০১৪ সালের আবারও উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। সেই থেকে মামলাটির বিচার কাজ পুরোপুরি স্থগিত।

এ বিষয়ে নিহতের বড় ভাই সাবেক সাংসদ শেখ আবুল হোসেন বলেন, ‘বিচারের ভার আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি। মামলার বাদী ১৪ বছর আগে ইন্তেকাল করেছেন। প্রধান সাক্ষী আসাদুজ্জামান লিটু ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসপি খোন্দকার ইকবাল ইন্তেকাল করেছেন। নিহত শেখ আবুল কাশেমের স্ত্রী আর সন্তানেরা হতাশা থেকে মামলার ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি নন বলে জানিয়েছেন তিনি।’

 

খুলনা গেজেট / এআর




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!