রাস্তায় ঘুরতে থাকা মেয়েটি অবশেষে পরিবারের সন্ধান পেয়েছে। শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) তাঁর পরিবারের সদস্যরা খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে গ্রহণ করেন। সন্ধ্যায় তারা তাঁদের গাজীপুরের বাড়ির উদেশ্য রওনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) ফেসবুকে ভাইরাল হন অচেনা মেয়েটি। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ওই কিশোরী বিভ্রান্ত হয়ে মহানগরী খুলনায় ঘোরাঘুরি করছিলেন। রাত কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী মেয়েটিকে রূপসা ট্রাফিক মোড় এলাকা থেকে উদ্ধার করে। পরে তাঁকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করে। ফেসবুকের মাধ্যমে এ খবর তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে মেয়েকে তাঁদের জিম্মায় নেন। তাঁদের বাড়ি গাজীপুরের শ্রীনগরে। ওখানকার চৌরাস্তা এলাকায় তাঁর বাবা ছোটখাট ব্যবসা করেন।
উদ্ধারকারী পুলিশ কনস্টেবল ও উই আর বাংলাদেশ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের এডমিন মো. আলী আকবর জানান, একটি ফেসবুক স্টাটাস দেখে সেখানে একজন কমেন্টে তার খোঁজ দিলে তাকে নগরীর রূপসা ট্রাফিক মোড় এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।পরবর্তীতে খবর পেয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন খুলনা অক্সিজেন ব্যাংক এর স্বেচ্ছাসেবীরা রূপসা থেকে নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেয়। মেয়েটি তখনও প্রলাপ বকছিলো। ফেসবুকের মাধ্যমেই ওই কিশোরীর বাবা -মা ও বান্ধবীর সাথে যোগাযোগ করে সংগঠনটি ।
নাম প্রকাশ না করে মেয়েটির বান্ধবী জানায় গত সোমবার (১৬ জানুয়ারি) গাজীপুর নিজ বাসা থেকে তাঁর বান্ধবী বের হয়ে আসে। তারপর থেকে কোন সন্ধান মিলছিল না। খুলনায় ইমু নামের এক ছেলের সাথে তাঁর প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। সে তাঁর উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়েছে বলে ধারণা করা করা হচ্ছে। তাঁর হাতে একটি কাগজে লেখা মোবাইল নম্বর পাওয়া গেছে। ইমু ইমু বলে বিলাপ করছিল।
বিকালে এ প্রতিবেদকের সাথে ওই পরিবারটির সাক্ষাতকালে মেয়েটি কিছু বলতে চাননি। মেয়ের ভবিষ্যত মাথায় রেখে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, ‘আগে মেয়ে সুস্থ হোক। তারপরে সব শুনে জানবো প্রকৃত ঘটনা কী। আমরা এ বিষয়ে কিছু বলতে চাইনা, মেয়েকে পেয়েছি; তাতেই ভাল লাগছে।’
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের চিকিৎসক ডা. অমিত সাহা জানান, মেয়েটি মানসিক ট্রমার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সে, দ্রুত সুস্থ্য হয়ে উঠবে বলেও আশা করিছি। তাঁর শারিরীক অবস্থা ভাল রয়েছে।
মেয়েটির মা-বাবা জানান, আকষ্মিকভাবে মেয়েকে হারিয়ে আমরা কী করবো বুঝতে পারছিলাম না। কেন সে ঘর ছাড়লো বা এমন অবস্থা কিছুই জানিনা। কিন্তু সে ইমু ইমু বলে বিলাপ করছে।
তাঁর বাবা দাবি করেন, মেয়ের আগেও মানসিক সমস্যাগ্রস্ত ছিল। চিকিৎসার পর সে চাকুরিরত ছিল। ১৪ জানুয়ারি সে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেনি। উদ্ধারকারীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে মেয়েকে নিয়ে ফিরছি। ও এখন কথা বলতে পারছে না। মেয়ে সুস্থ হলে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারবো।
অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষার্থী শেখ ইমু ওই মেয়ের সাথে সর্ম্পকের বিষয়টি স্বীকার বলেন, ওই মেয়ে প্রতারণা করেছে। সে তাঁর বয়স, আগের বিয়ে ও সন্তানের বিষয়টি চেপছিল। বিষয়টি জানতে পেরে আমার মোবাইল ও সোশ্যাল মাধ্যম থেকে ব্লক করে দেই। একারণে আমার সাথে সে যোগাযোগ করতে পারেনি। সে আগেও খুলনায় এসেছে।
খুলনা গেজেট/কেডি