দীর্ঘদিন ধরে হাফানি, শ্বাসকষ্টসহ একাধিক সমস্যায় ভুগছেন খুলনার ফুলতলা উপজেলার বাসন্তি সরকার। লকডাউনের খবর শুনে তিনি চিকিৎসার জন্য তড়িঘড়ি করে আজ খুলনায় এসেছেন। চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকের দেওয়া সকল ওষুধ ক্রয় করতে তিনি নগরীর হেরাজ মার্কেটে আসেন ।
শুধু বাসন্তি দেবিই নয়, অসংখ্য মানুষ ভিড় করেছেন খুলনার ওষুধের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার হেরাজ মার্কেটে। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় খুলনাসহ সারাদেশে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা হয়েছে। এ ঘোষণায় আজ খুলনার ওষুধের ফার্মেসিগুলোতেও ছিল চোখে পড়ার মতো ভিড়। সরেজমিনে হেরাজ মার্কেট ঘুরে এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে।
বাসন্তি দেবি খুলনা গেজেটকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন অসুস্থ। টাকার জন্য খুলনা চিকিৎসা করাতে আসতে পারছিলাম না। শনিবার যখন শুনলাম লকডাউন ঘোষনা হয়েছে তখন যেভাবেই হো টাকা ধার করে চিকিৎসা করিয়ে সকল ওষুধ ক্রয় করতে যাচ্ছি।
নগরীর নিরালা আবাসিকের ৫ নং রোডের বাসিন্দা মো: আকতার হোসেন খুলনা গেজেটকে বলেন, লকডাউনের কারণে যদি বাসা থেকে বের হতে সমস্যা হয় এজন্যই নিজের ও নিজের স্ত্রীর জন্য ৬ হাজার টাকার ওষুধ অগ্রীম কিনেছি।
এদিকে দোকানিরা বলছেন, প্যারাসিটামল, গ্যাস্ট্রিকের মতো সাধারণ ওষুধ ছাড়াও দীর্ঘমেয়াদি রোগের ওষুধ বেশ বিক্রি হচ্ছে।
মুনির ড্রাগসের মোঃ আশিক বলেন, ক্রেতারা একই সাথে দুই মাসের ওষুধ কিনছেন। ইনহেলার ও শ্বাসকষ্টের ওষুধগুলো বিক্রি বেড়েছে। সাথে সাথে বিভিন্ন ওটিসি মেডিসিনগুলো কিনছেন অনেক ক্রেতারা।
হাসান ফার্মেসির এক সেলম্যাসন বলেন, “আগের চেয়ে অনেক বিক্রি বেড়েছে। সব সময় ক্রেতা থাকছে। তবে এটা শুধু লকডাউনের প্রভাবে তা কিন্তু নয়, মাসের শুরু এ জন্যও হতে পারে।
শামিম ফার্মেসির সেলসম্যান জানায়, সাধারণত ১ থেকে ১০ তারিখের ভিতরে খুচরা সেল বেশি থাকে। এছাড়া এ মাসে লক ডাউন শুরু হওযায় সেলস এর হার বাড়বে এটা ই স্বাভাবিক।
শুধু ওষুধের দোকানেই নয় সার্জিকাল আইটেমের দোকানগুলোতেও ছিল উপচে পড়া ভিড়। বিভিন্ন মানের ও দামের মাস্কের বিক্রি বেড়েছে। অধিকাংশ সার্জিকাল দোকানের সামনে ক্রেতাগন দাড়িযে আছেন মাস্ক কেনার জন্য।
বিসমিল্লাহ সার্জিক্যালের বিক্রেতা মোঃ স্বাদ বলেন, গতকাল থেকেই সাধারণ মানুষ ও হকাররা মাস্ক ক্রয় করছেন। লকডাউন ঘোষণার পর থেকে কয়েক বক্স ধরে মাস্ক্র ক্রয় করছেন ক্রেতারা। এছাড়াও অক্সিজেনের চাপ বাড়ায় অক্সিজেনের ফ্লো-মিটার এর বিক্রি বেড়েছে।
তবে মাস্ক এবং হ্যান্ডগ্লাভসের দাম বৃদ্ধি করে দিয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন দোকানের সামনে দাড়িয়ে থাকা ক্রেতারা। অপরদিকে দোকানিরা দাবি করছেন, পূর্বে যে মূল্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ক্রয় করা হতো হঠাৎ করে তার দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে কৃত্রিম এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে।