মানুষের মননশীল, চিন্তাশীল, সৃষ্টিশীল চিন্তার বিস্ফোরণ ঘটে বইয়ের মাধ্যমে। বই মানুষের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটায়, মননশীলতার সম্প্রসারণ ও জ্ঞানের গভীরতা বাড়ায়। আর এই বইয়ের যোগান দিতে প্রতি বছর আমাদের দেশে অয়োজন করা হয় বইমেলার।
করোনা পরিস্থিতির কারণে এবছর ফেব্রুয়ারিতে দেশের কোথাও বই মেলার আয়োজন করা যায়নি। তবে এর মাঝেও খুলনায় চমৎকার এক আয়োজন করেছে ‘এন্টারটেইনমেন্ট অল ইন অন গ্রুপ এন্ড বুক ব্যাংক’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নগরীর শিববাড়ী মোড়ে বিনামুল্যে তাদের বুক ব্যাংকের সংগৃহিত বই শেয়ার করছেন সংগঠনের সদস্যরা। “সবার জন্য শিক্ষা যার প্রধান উপকরণ বই, আর এই বইয়ের চাহিদা মেটাতে বিনামূল্যে শেয়ার করবো আমাদের বই” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখেই ছিলো তাদের এই ভিন্নধর্মী আয়োজন। যে কেউ চাইলে এখানে বই প্রদান এবং একজন ব্যক্তি এখান খেকে বিনামূলে সর্বোচ্চ পাঁচটি বই সংগ্রহ করতে পারবে। খুলনার মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক বিনা মূল্যে বই বিতরণ কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন।
আয়োজকদের মধ্যে মোঃ রিয়াদ আহমেদ বলেন, “আমাদের আত্মার মাঝে যে জমাট বাধা সমুদ্র সেই সমুদ্রের বরফ ভাঙার কুঠার হলো বই। বই আমাদের পরম বন্ধু। তবে বই পড়া হয়ে গেলে অনেকেই সেটি স্টোর রুমে ফেলে রাখেন। আজকে যে বইটি গুরুত্বপূর্ণ কাল হয়তো সেই বইটির প্রয়োজন ফুরিয়ে যেতে পারে। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে যাদের কাছে এমন বই জমা রয়েছে বা কাজে লাগছে না তাদের থেকে ব্ই গুলো সংগ্রহ করে যাদের প্রয়োজন তাদের সাথে শেয়ার করা।” প্যারিসের পর এশিয়া মহাদেশে খুলনাতেই প্রথমবারের মতো এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনটির ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, আমরা চাই একটি পূর্ণাঙ্গ বুক ব্যাংক তৈরি করতে যেখানে ক্লাসের পাঠ্য বই থেকে শুরু করে গল্প, উপন্যাস, কবিতা সব ধরণের বই থাকবে। কারো প্রয়োজন হলেই আমাদের থেকে বই নিতে পারবে। বইয়ের কারনে যাতে কোনো শিক্ষার্থী ঝরে না পড়ে সেদিকেও আমরা সজাগ দৃষ্টি দিবো।
শিক্ষার্থী তানজিলা হুমায়ূন করবী বলেন, “ইভেন্টটা খুবি ভালো ছিলো এবং প্রশংসনীয় বটে। আসতে একটু দেরি হওয়ায় গল্পের বই সংগ্রহ করতে পারিনি, এজন্য একটু খারাপ লাগলেও নিজের ডোনেট করা বই এখানে দেখে খুবি ভালো লাগছে।”