খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭
  ভারতীয় সব বাংলা চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে করা রিটের শুনানি বুধবার
চোখ হারানোর শঙ্কায় অনেক রোগী

খুলনার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে অপারেশন বন্ধ রেখে চলছে প্রাইভেট ক্লিনিকে !

বশির হোসেন

সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার বাসিন্দা ৬০ বছর বয়সী নাজমা বেগম গত ফেব্রুয়ারিতে খুলনার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে চোখের ছানি অপারেশন করেন। তখন ২৫ হাজার টাকা খরচ করে অপারেশন করিয়েছিলেন তিনি। তবে অপারেশনের পর দিন থেকেই চোখ থেকে পানি পড়লে তখন চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন “এটা কিছু না, ঠিক হয়ে যাবে।” এরপর করোনায় সব কিছু লকডাউন হলে সেবা সীমিত হয়ে যায় এই হাসপাতালে। নাজমা বেগমের চোখ থেকে পানি পড়তে পড়তে নালি বন্ধ হয়ে অন্ধ হওয়ার উপক্রম। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে একবার চোখ দেখাতে পারলেও অপারেশন আর হচ্ছে না। কবে হবে তার কোন ঠিকও নেই।

খুলনার শিরোমনি এলাকায় বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা যায়, কুষ্টিয়া ও মাগুরা থেকে ষাটোর্ধ আব্দুল ওয়াহাব এবং নিতাই গাইনের অবস্থাও একই। মাত্র ৬ মাস আগেও চোখে তেমন সমস্যা না থাকলেও এখন হাসপাতালে আসতে হয়েছে অন্যের সহযোগিতা নিয়ে। এসে জানতে পারলেন এখানে সীমিত পরিসরে ছানি অপারেশন শুরু হলেও নালী একেবারেই বন্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী বলেন, প্রতিদিনই ১০ থেকে ১২ জন রোগী বিভিন্ন স্থান থেকে এসে নালী অপারেশন না করে ফিরে যায়। এসব সাধারণ রোগীদের ভেতরে যাদের প্রাইভেট হাসপাতালে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে অপারেশন করানোর সামর্থ আছে তাদের কৌশলে বাগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রাইভেট চেম্বারে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের প্রধান দুই সার্জন ডাঃ বিএম সাইফুর রহমান এবং ডাঃ মিজানুর রহমান নাসিম। মুলত: তারা দু’জনই আলাদা দু’টি চক্ষু হাসপাতালের মালিক। ডাঃ বিএম সাইফুর রহমান এর মালিকানাধীন তার নিজ বাড়িতে আই প্যাভেলিয়ান ছাড়াও অন্য ক্লিনিকে তিনি চোখের সব ধরণের অপারেশন করছেন। একই ভাবে ডাঃ মিজানুর রহমান নাসিম এর অংশীদারি মালিকানাধীন দৌলতপুরের খুলনা চক্ষু হাসপাতালে ডাঃ নাসিমসহ এই হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক দেদারসে অপারেশন করে যাচ্ছেন। ফলে যাদের চেম্বারে যাওয়ার সামর্থ নেই তাদের চোখ নষ্ট হচ্ছে, কবে বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে অপারেশন চালু হবে এই আশায়।

কুষ্টিয়া থেকে আসা আব্দুল ওয়াহাব বলেন, আমি গত দুই মাসে পর পর এখানে আসি আমার ছেলের সাহায্য নিয়ে চোখের নালী অপারেশন করানোর জন্য। কিন্তু এখানে এসে ফিরে যাই কবে চালু হবে তা নিশ্চিত কেউ বলতে পারছে না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “করোনার কারণে যদি অপারেশন বন্ধ থাকবে তাহলে তো সব যায়গায় বন্ধ থাকবে।” কিন্তু এখানে বন্ধ রেখে নিজের ক্লিনিকে রোগী বাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অপকৌশল বলে তিনি মনে করেন।

খুলনা বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ আব্দুর রব খুলনা গেজেটকে বলেন, “করোনা পরিস্থিতির কারণে অপারেশন সীমিত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তা পুনরায় চালু করা হবে।”

খুলনা গেজেট / এমবিএইচ / এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!