খুলনা জেলার কয়রা থানার ৩ নং মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য ও ডিলারের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া হতদরিদ্রের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী ১০ টাকা কেজির চাল (বর্তমানে ১৫ টাকা) কার্ডধারীদের না দিয়ে নিজস্ব লোকজনকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরকার প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিল, অক্টোম্বর-নভেম্বর ও ডিসেম্বর ৫ মাস কার্ডধারী হতদরিদ্রদের প্রতিমাসে স্বল্প মূল্যে ৩০ কেজি চাল ডিলারের মাধ্যমে দিয়ে থাকেন।
কয়রা উপজেলার ৭ নং ওয়ার্ডের ভাগবায় তাসলিমা বেগম, মনোয়ারা বেগম, শহিদুল, ফরিদা বেগমসহ আরো অনেকের নামে কার্ড থাকলেও গত এক বছরে একবারও চাল পাননি তারা। বঞ্চিত কার্ডধারীরা জানান, তাদের নাম অনলাইনে থাকার পরেও তাদেরকে চাল দেয়া হচ্ছে না এবং বরাদ্দকৃত জিআর চাল কার্ডধারীদের না দিয়ে কোন তালিকা না নিয়েই মনগড়া ভাবে বিতরণ করেছেন। এতে করে প্রকৃত কার্ডধারীরা চাল না পেলেও তাদের মনোনীত পছন্দের ব্যক্তিরা পেয়েছেন।
তারা আরও বলেন, ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম শাফী ও ডিলার হতদরিদ্র কার্ডধারীদের চাল না দিয়ে নিজস্ব লোকজনকে দিচ্ছেন।
নতুন করে চাল পাওয়াদের মধ্যে জাকির হোসেন বলেন, আমার কোন কার্ড নেই এবং একবার চাল পেয়েছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ ধরণের ঘটনা শুধু ওই ওয়ার্ডে নয়, উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়নে কম বেশি এমন অভিযোগ রয়েছে।
ডিলার কৃষ্ণপদ মন্ডল বলেন, চাল দেওয়ার সময় কার্ড ও মাষ্টাররোল অনুযায়ী দেওয়া হয়। তিনি বলেন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য ৩৩ শতাংশ কার্ড বাতিল করেছে, এজন্য যাদের নাম মাষ্টাররোলে আছে তাদের কার্ড না থাকলেও চাল দেওয়া হয়। তাছাড়া চেয়ারম্যান অত্র কমিটির সভাপতি, তিনি চাইলে তালিকা পরিবর্তন করতে পারেন।
ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম শাফী জানান, কার্ডধারীদের মধ্যে যারা কয়েকবার চাল পেয়েছে এবার তাদের না দিয়ে কার্ড নেই কিন্তু দরিদ্র এমন কয়েকজনকে চাল দেয়া হয়েছে। কার্ড নেই যাদের তারা কেন চাল পাবেন, এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার মোঃ মহসীন আলী (উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার) জানান, চাল দেওয়ার সময় তিনি উপস্থিত থাকলেও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী বলেন, তাদেরকে তদন্তের মাধ্যমে বাদ দেয়া হয়েছে। মাষ্টাররোলের অনুমোদন নিয়ে নতুন কিছু ব্যক্তিকে যুক্ত করা হয়েছে। তাদের অনলাইন ২৩ অক্টোবর করা হবে। আর বাদ দেওয়া পরিবারগুলো কিভাবে অনলাইনে যুক্ত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওখানকার ইউপি সদস্য একটা মামলায় জড়িয়ে যাওয়ায় বাইরে ছিল। তখন কোনভাবে তারা অনলাইন করে ফেলেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রোকুনুজ্জামান বলেন, কার্ডধারীর চাল অন্যকে দেয়ার কোন বিধান নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/ টি আই