খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ কার্তিক, ১৪৩১ | ২২ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  খা‌লিশপু‌রের হা‌সিবুর হত্যায় ২১ জনের যাবজ্জীবন, খালাস ৫

কয়রাকে পৃথক থানা করার পরামর্শ বঙ্গবন্ধুর

নিজস্ব প্রতিবেদক

সতেরটি ইউনিয়ন নিয়ে পাইকগাছা থানা। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা দুরূহ। যোগাযোগ একমাত্র নৌ পথে। লঞ্চ বা নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পূর্বে ট্রলার ছিল না। কপিলমুনি থেকে আংটিহারা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা পুলিশ প্রশাসন বা সার্কেল অফিসার (উন্নয়ন) এর পক্ষে সম্ভব ছিল না। দক্ষিণ বেদকাশী বা জোড়শিং এলাকায় ডাকাতি হলে মামলা করতে পাইকগাছা পর্যন্ত আসতে হত। নারী-পুরুষের অপমৃত্যু হলে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা জেনারেল হাসপাতালে আসা এবং ফিরে যেতে তিন দিন সময় লাগত। সতেরটি ইউনিয়নের জমি রেজিস্ট্রীর জন্য একমাত্র সাব-রেজিস্ট্রী অফিস পাইকগাছায়। সবকিছু মিলে পাইকগাছা থেকে সতেরটি ইউনিয়নে নিয়ন্ত্রণ করা এবং এলাকাবাসিদের সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছিল না।

এ প্রেক্ষাপটে ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে খুলনা-৯ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএল কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও মুজিব বাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার স ম বাবর আলী। ১৯৭৪ সালের কোন এক সময় এখানকার সংসদ সদস্য স ম বাবর আলী চাঁদখালী ইউনিয়নের আলমতলা থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন আংটিহারা পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে দাবি উত্থাপন করেন। দাবির প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু বলেন, সত্তুর সালের জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে এবং ১৯৭২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাইকগাছা সফর করেছি। সেখানকার মানুষের দুঃখ-কষ্ট আমি অনুভব করি। এ প্রসংগে বলেন, খুলনার পাইকগাছা বিভক্ত করে কয়রা এবং শিবচরে পৃথক থানা করা প্রয়োজন। সরকার প্রধান স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানান, পাইকগাছা বিভক্ত করে কয়রা নামক পৃথক থানা স্থাপন করলে প্রশাসন তার নিজস্ব গতিতে উন্নয়ন তৎপরতা এগিয়ে নেবে।

সরকার প্রধানের পরামর্শে স্থানীয় সংসদ সদস্য স ম বাবর আলীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কয়রা নামে নতুন থানা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৯৭৪ সালের মে মাসের দিকে খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্পীডবোটে জায়গীরমহল পৌঁছান। সরেজমিনে দেখে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা মদিনাবাদকে হেডকোয়ার্টার নির্ধারণ করে দক্ষিণ বেদকাশী, উত্তর বেদকাশী, কয়রা, মহারাজপুর, মহেশ্বরীপুর, বাগালী ও আমাদীকে নিয়ে পৃথক থানা করার প্রতিবেদন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সরকার প্রধানের মৃত্যুর পর এ প্রক্রিয়া থেমে যায়। কিন্তু এ নিয়ে আলোচনা অব্যাহত ছিল। এ প্রসংগে স্মৃতিচারণ করতে যেয়ে গর্বিত মুক্তিযোদ্ধা স ম বাবর আলী বলেন, আজকের কয়রা উপজেলার প্রক্রিয়া বঙ্গবন্ধুই শুরু করেছিলেন। সূত্র : খুলনায় বঙ্গবন্ধু নামক গ্রন্থ।

 

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!