ঈদুল আজহার আর মাত্র বাকিেএক দিন। এ সময় মার্কেটে ক্রেতার চাপ বাড়ার প্রত্যাশা করেছিলেন যশোরের অভয়নগরের পোশাক ব্যবসায়ীরা। অথচ সেভাবে জমে ওঠেনি ঈদের কেনাকাটা। ঈদের শুরু থেকেই ঢিলেঢালা গেলেও শেষ সময়ে ক্রেতারা হাত খুলে মার্কেট করবেন এমন প্রত্যাশা ছিল অনেক ব্যবসায়ীর মধ্যে। কিন্তু সেটা হয়নি। বরং হতাশাই শোনা গেল বেশিরভাগ ব্যবসায়ীর কন্ঠে।
শুক্রবারে উপজেলার বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে। বিক্রেতাদের দাবি, ঈদুল আজহায় এমনিতেই বেচা কেনা কম হয়। কিন্ত অন্যান্য কোরবানির ঈদের তুলনায় এবার বিক্রি অনেক কম। প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না কারোরই।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে এ সময় যেখানে মার্কেটে ক্রেতাদের ব্যাপক সমগম থাকার কথা, সেখানে দেখা মিললো স্বাভাবিক সময়ের চিত্র। অনেক দোকানপাটে ক্রেতার অভাবে দোকানিরা পেপার পড়ে অলস সময় কাটাচ্ছেন। কিছু দোকানে দু-চারজন ক্রেতা থাকলেও অধিকাংশ দোকানই ছিল ফাঁকা।
উপজেলার আনোয়ারা সুপার মার্কেটের সাদিয়া গার্মেন্টস এর স্বত্বাধিকারী মেহেদী মজুমদার এ প্রতিবেদককে বলেন, কোনোকিছু স্বাভাবিক নেই। খাবারের দাম বেশি হওয়ার কারণে মানুষের হাতে টাকা নেই। মার্কেট করবে কিভাবে?
মর্ডাণ সুপার মার্কেটের বিসমিল্লাহ গার্মেন্টস এর বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি কারো অনুকূলে নেই। অনেক এলাকায় বন্যা গেছে। মানুষ হাতের টাকা খরচ করতে চাচ্ছে না। ভবিষ্যত নিয়ে অনেকে চিন্তিত । ফলে বিলাসিতার সময় তাদের নেই। তিনি আরও বলেন, একদিকে কোরবানির চাপ, আবার সংসারের খরচ অস্বাভাবিক বেড়েছে। অন্যদিকে বিশ্ব মন্দার ঝুকি। সব মিলিয়ে স্বাভাবিকভাবে মানুষ বুঝে খরচ করছে। যেটা দরকার, সেটার বাইরে কেউ কিছু কিনছে না।
আনোয়ারা সুপার মার্কেটের সেলিম গার্মেন্টস এর স্বত্বাধিকারী শেখ মেহেদী হাসান বলেন, গত দুই দিন স্বাভাবিকের চেয়ে ক্রেতা সমাগম কিছুটা বেড়েছে। তবে কম দামি পণ্যের কেনা বেচা কিছুটা হলেও দামি পণ্যের ক্রেতা নেই বললেই চলে। এদিন এসব দোকানপাটে যারা কেনা বেচা করতে এসেছেন তাদের মধ্যে মাঝ বয়সী মহিলার সংখ্যা বেশি। কিছু ক্রেতা আবার স্ত্রী – সন্তানদের নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন।
নওয়াপাড়া কাপুড়িয়া পট্টির গাজী বস্ত্রালয়ের স্বত্বাধিকারী জিএম সোহাগ বলেন, গত দুই বছরের করোনার প্রকোপ কমতে না কমতেই আবার করোনার প্রকোপ বাড়ায় নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে একটু বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে অন্যান্য ঈদে এ সময় তিন চার গুণ বেশি বিক্রি হতো।
নওয়াপাড়া ইনস্টিটিউট মার্কেটের মুসলিম বস্ত্রালয়ের কর্ণধার বলেন, এবার ধারণার অর্ধেক ক্রেতাও পাইনি। ঈদকে কেন্দ্র করে যে পরিমাণ পোশাক উঠানো হয়েছে, এখনও তার এক-তৃতীয়াংশ বিক্রি হয়নি। ক্রেতা কম দামেও পণ্য কিনতে চাচ্ছে না। গত মঙ্গলবার হাট বার ছিল সেদিন মাত্র ৫৫০ টাকা কেনা বেচা করেছি। খুবই খারাপ অবস্থা যাচ্ছে। তবে এ উপজেলার ব্যবসায়ীরা আশা করছেন শনিবার চাঁদ রাতে ক্রেতা সমাগম বাড়বে ও কেনা বেচা বর্তমানের চেয়ে বৃদ্ধি পাবে।