কেশবপুর উপজেলায় চলতি বছর হলুদের ব্যাপক চাষ হয়েছে। হলুদের চাহিদা ও বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় কৃষকদের ভেতর এ মশলা জাতীয় ফসল চাষে আগ্রহ বেড়েছে। খরচ কম হওয়ায় এবং বাজার দর ভাল থাকায় হলুদ বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তারা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ৬০০ বিঘা জমিতে হলুদের চাষ হয়েছে। জলাবদ্ধতামুক্ত উঁচু এলাকা হলুদ চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় এবং অন্যান্য বছরের তুলনায় হলুদের দাম বেশি হওয়ায় উপজেলার কাবিলপুর, হাসানপুর, বরনডালি, মৃর্জানগর, চাঁদড়া, বড়েঙ্গা, মঙ্গলকোট, মজিদপুর, দোরমুটিয়া ও সাতবাড়িয়াসহ অন্যান্য গ্রামের কৃষকেরাও ব্যাপকভাবে হলুদের আবাদ করেছেন।
ভোগতী নরেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক মহির উদ্দিন জানান, তিনি দোরমুটিয়া গ্রামের জনৈক এক ব্যক্তির ১ বিঘা ১৫ কাঠা জমি বাৎসরিক কাঠা প্রতি ১ হাজার টাকা দরে ইজারা দিয়ে হলুদ আবাদ করেছেন। তার হলুদ আবাদে প্রতি কাঠায় ৭২০ টাকা বীজ, সার ও ঔষধ বাবদ ২০০ টাকা এবং শ্রমিক বাবদ ১২০০ টাকা খরচ হয়েছে। গড় মিলে তার এক বিঘা জমিতে জমির ইজারাসহ প্রায় ৬২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আশা করছেন কাঠা প্রতি ৫ থেকে ৬ মণ হলুদ পাবেন। সে ক্ষেত্রে তিনি বিঘা প্রতি ১০০ মণ থেকে ১২০ মণ হলুদ উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন। কাঁচা হলুদের বাজার দর গত বছর প্রকার ভেদে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা বিক্রি হয়ে ছিল। এ বছর বাজার দর যদি গত বছরেরটাও থাকে তাহলে তিনি বিঘা প্রতি প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাভবান হবেন। তবে হলুদের পচন রোগ দেখা দিলে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাবে।
মজিদপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, এই সময় হলুদে বিভিন্ন রোগের আক্রমণ হয়ে থাকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সুষম মাত্রায় ঔষধ ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করে সেটা নিরাময় করা সম্ভব।
দোরমুটিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান বলেন, হলুদ আবাদে খরচ অন্য ফসলের তুলনায় কম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে হলুদ চাষ করে লোকসান গুণতে হয় না। ফলে মুনাফা ভালো হয়। এমন কথাই জানালেন উপজেলার অন্যান্য কৃষকেরাও।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, কেশবপুরের মাটি হলুদ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। হলুদে তেমন কোন ধরনের রোগবালাই নেই বললেই চলে। হলুদ আবাদ সাধারণত ৯ মাসব্যাপি হয়ে থাকে। এ উপজেলার কৃষকরা সাধারণত মাখালবাড়ি, ডিমলা ও স্থানীয় জাতের হলুদের আবাদ বেশি করে। সুন্দরভাবে পরিচর্যা করলে হলুদ বিঘা প্রতি ১২৫ মণ উৎপাদন হয়। এ বছর হলুদের আবাদ হয়েছে ৬০০ বিঘা আর গত বছর আবাদ হয়েছিল ৪৫০ বিঘা। যা গত বছরের তুলনায় ১৫০ বিঘা বেশি। কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সবসময় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আগামীতে কৃষকের মশলা জাতীয় ফসল চাষের আগ্রহ বাড়াতে কৃষি বিভাগ কাজ করছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম