কেশবপুরের বিল গরালিয়ার কৃষকদের চলতি বোরো মৌসুমে আবাদের জন্য ঘের মালিকরা হরিহর নদের সংযোগ খালের পলি অপসারণ করলেন। উপজেলার বড়েঙ্গার নতুন খাল দিয়ে ওই বিলের পানি হরিহর নদে নিষ্কাশিত হয়। খালের হরিহর নদের উৎপত্তি স্থল থেকে বড়েঙ্গা স্লুইস গেট পর্যন্ত পলিতে ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাশনে বাঁধাগ্রস্থ হওয়ায় বিলে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। কৃষকদের স্বার্থে চলতি বোরো মৌসুমে আবাদের জন্য ঘের মালিকরাই এক্সকেভেটর দিয়ে পলি অপসারণের কাজ চালান।
সরেজমিনে সোমবার খালটির বড়েঙ্গা নামক স্থানে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় স্লুইস গেট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার খালের পলি অপসারণ করায় বিলের পানি সহজে খাল দিয়ে নদে গিয়ে পড়ছে। কৃষকরা ওই বিলে প্রায় ৬ হাজার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন। ওই স্লুইস গেটের পিছনের অংশে হরিহর নদ পর্যন্ত পলি ভরাট হওয়ায় বিল থেকে পানি প্রবাহে বাঁধার সৃষ্টি হয়। এতে দেখা দেয় বিলে জলাবদ্ধতা।
বড়েঙ্গা গ্রামের ওই বিলের কৃষক রাকিবুল আলম লালু জানান, খালের পলি অপসারণ কাজ করায় দ্রুত বিল থেকে পানি বের হয়ে নদে গিয়ে পড়ছে। এভাবে পানি নেবে গেলে সহজেই বিলের বোরো আবাদ করা সম্ভব হবে।
একই গ্রামের কৃষক মাসুদুজ্জামান বলেন, খালের পলি অপসারণের ফলে বিলের পানি সরতে শুরু করেছে। তবে এ কাজটি আরো আগে করা উচিত ছিল। যদি বিলের অংশের খালের থেকে স্লুইস গেটের পিছনের অংশ পলি অপসারণের পরও উঁচু থেকে যায় তাহলে দু-এক দিন পানি সরে আর সরবে না। সে ক্ষেত্রে কৃষকদের চলতি বোরো মৌসুমে আবাদ করা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাবে।
কন্দর্পপুর গ্রামের কৃষক আনিসুর রহমান বলেন, বিলের পানি দ্রুত সরে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে আবাদ করতে কোন সমস্যা হবে না।
একই গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান জানান, পলি অপসারণের পর খাল দিয়ে ভালোই পানি সরছে। সে কারণে বিলের কৃষকদের ভেতর বোরো আবাদের আশার সঞ্চার দেখা দিয়েছে।
গরালিয়া বিলের ঘের মালিক খন্দকার ইন্তাজ বলেন, ওই বিলের ঘের মালিকদের সিদ্ধান্তের আলোকে এক্সকেভেটর দিয়ে গত ৬ দিন খালের পলি অপসারণ করা হয়েছে। যে কারণে বিলের পানি দ্রুত সরতে শুরু করেছে। এখন বোরো আবাদের কৃষকদের আর কোন শঙ্কা থাকবে না।
গরালিয়া বিলের ঘের মালিক ও পানি নিষ্কাশন কমিটির সভাপতি মজিবর রহমান চান বলেন, কৃষকদের বোরো আবাদের স্বার্থে স্লুইস গেট থেকে হরিহর নদ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার ভরাট হওয়া পলি এক্সকেভেটর দিয়ে অপসারণ কাজ চালানো হয়েছে। ওই বিলে প্রতি বছর প্রায় ৬ হাজার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ হয়। কৃষকদের বোরো আবাদের স্বার্থে বিলের ঘের মালিকরা সিদ্ধান্ত নিয়ে পলি অপসারণের কাজ চালান। সোমবার দুপুরে পলি অপসারণের কাজ শেষ হওয়ার কারণে পানি দ্রুত সরতে শুরু হয়েছে। এ কারণে সহজেই কৃষকরা বিলে আবাদ করতে পারবেন।
খুলনা গেজেট/এনএম