খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাসা থেকে ২ সন্তানসহ বাবা-মায়ের মরদেহ উদ্ধার
  কুমিল্লায় অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত বেড়ে ৭

কাশিয়াডাঙ্গা-ত্রিমোহনী কপোতাক্ষ নদের বাঁশের সাঁকো এখন মরণ ফাঁদ

জুলফিকার আলী, কলারোয়া

সাতক্ষীরার কলারোয়া ও যশোরের কেশবপুর উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা-ত্রিমোহনী বাজার বিভক্তকারী কপোতাক্ষ নদের ওপর সংযোগ সেতু না থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন দুটি উপজেলার প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২৭৫ ফুট দীর্ঘ বাঁশের সাঁকোতেই পারাপার হতে হচ্ছে জনসাধারণের। বলতে গেলে এই একটিমাত্র সাঁকোই গ্রামগুলোর ৫০ হাজার মানুষের ভরসা।

স্থানীয়রা জানান,কলারোয়া ও কেশবপুর উপজেলার সঙ্গে দ্রুততম সময়ে যোগাযোগের মাধ্যম ও বাণিজ্যিক সুবিধা থাকায় দুই উপজেলার প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ এই বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করেন। কিছুদিন পর পর স্থানীয়রা সাঁকোটি সংস্কার করলেও সপ্তাহ না যেতেই পুনরায় নড়বড়ে হয়ে পড়ছে।

তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন এ সাঁকো দিয়ে কাশিয়াডাঙ্গার ২টি ও ত্রিমোহনীর ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। ব্যহত হচ্ছে জরুরি চিকিৎসাসেবা। তারা আরও জানান, কাশিয়াডাঙ্গা-ত্রিমোহনী বাঁশের সাঁকো দিয়ে কলারোয়া উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা, মাঠপাড়া, ছলিমপুর, পাকুড়িয়া, দলুইপুর, বড় খলসী, ছোট খলসী, বামনখালী, গড়ান বাজার, ক্ষেত্রপাড়া ও ওফাপুর এবং কেশবপুর উপজেলার চাদড়া, বেলতলা, হাজরাকাটি, খাজুরা, হাকিমপুর, পাজাখোল, রাজগঞ্জ, বরনডালি, ঘোপসানা, জাহানপুর, নিমতলা, ভোগতিসহ দুই উপজেলার প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ। কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের লিয়াকত আলী জানান, স্থানীয় মানুষের চলাচলের জন্য ২০০১ সালে তিনিসহ স্থানীয় ২০-২২ যুবকের সহায়তায় কপোতাক্ষ নদের ওপর কাশিয়াডাঙ্গা-ত্রিমোহনী বাজারে ২৭৫ফুট দীর্ঘ বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেন।

সে সময় সাঁকো তৈরিতে তাদের ৪ লাখ টাকা খরচ হয়। সাঁকোটি তৈরির পর কয়েকবার সংস্কার করা হয়। বর্তমানে সংস্কার করলেও সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তার পরও দুই উপজেলার প্রায় ৫০হাজার মানুষের চলাচলের জন্য নিজেরা সংস্কার কাজ করছি। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন শিশু, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ দুই উপজেলার শত শত মানুষ এই সাঁকো দিয়ে চলাচল করে থাকে। এ ছাড়া মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলসহ ছোট যান চলাচল করায় ঘটছে দুর্ঘটনা। দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি করলেও এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

কলারোয়ার ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান জানান, কাশিয়াডাঙ্গা-ত্রিমোহনী বাজারে সংযোগ সেতু না থাকায় আমাদের (সাতক্ষীরা জেলার অধিবাসী) বেশি দুর্ভোগ হচ্ছে। কারণ কলারোয়া বাজার থেকে কেশবপুরের দূরত্ব কম হওয়ায় উৎপাদিত ফসল কেশবপুর মোকামে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু বাঁশের সাঁকো দিয়ে ভ্যান চলাচল করতে না পারায় এসব মালামাল নিজেদের ঘাড়ে নিয়ে সাঁকো পার হতে হয়।

দেয়াড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান মফে জনদুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি কপোতাক্ষ নদের ওপর (কাশিয়াডাঙ্গা-ত্রিমোহিনী) পাকা সেতু নির্মাণের। এছাড়া এখানে সেতু নির্মাণ হলে কলারোয়া উপজেলার ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অর্থনীতির উন্নয়ন হবে।

কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু জানান, কাশিয়াডাঙ্গা ও কেশবপুর উপজেলার ত্রিমোহিনী বাজার সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের ওপর পাকা সংযোগ সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। তিনি বলেন, উপজেলার উন্নয়ন ও জনদুর্ভোগ দূর করতে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা করা হয়েছে।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!