সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য নিজামউদ্দিনের বিরুদ্ধে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়, হতদরিদ্র দিনমজুর ও শ্রমিকদের মাঝে মাথাপিছু ৫০০ টাকা করে বরাদ্দকৃত টাকা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
ভাড়াসিমলা ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়, হতদরিদ্র দিনমজুর ও শ্রমিকদের জন্য প্রণোদনা হিসেবে ৭নং ওয়ার্ডের ২২২ জনকে মাথাপিছু ৫০০ টাকা করে দেওয়ার জন্য তালিকা প্রস্তুত করেন ইউপি সদস্য নিজামউদ্দিন। কোরবানির ঈদের কয়েকদিন আগে ওই টাকা বন্টন করা হয়।
ভাড়াসিমলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, পূর্ব নারয়ণপুর গ্রামের শামীম হোসেন, মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ আসাদুল হোসেনসহ কয়েকজন জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রণোদনা দেয়ার জন্য ইউপি সদস্য নিজামউদ্দিন ২২২ জনের যে তালিকা প্রস্তত করেছেন তাতে স্বজনপ্রীতি করা হয়েছে। এছাড়াও নারায়ণপুর দারুস সালাম হাফিজিয়া মাদ্রাসার ১০ থেকে ১১ বছর বয়সী ফরহাদ হোসেন, মুজিহাদি হোসেন, নাহিদ হাসান, সালমান ফারসি, হাসানুর রহমানসহ ১৮ জন ছাত্রের পিতার মোবাইল ও জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নয় হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। একইভাবে শহীদুল ইসলাম, আজমীর হোসেন, মোঃ ওহাব আলী ও রায়হান সরদারের নাম দু’বার করে ব্যবহার করে টাকা তোলা হয়েছে। মেম্বরের দু’ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিক এবং ওমর ফারুকের নামে টাকা তোলা হয়েছে। মেম্বরের বড় ভাই এশার আলী ও তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুনের নামে ৫০০ টাকা করে তোলা হয়েছে। ১০ মাস আগে মারা যাওয়া সোবহান সরদারের নামে টাকা তোলা হয়েছে।
এদিকে তালিকায় নাম থাকার পরও আতর আলীর স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন, জুম্মানের ছেলে আবু বক্কর, আব্দুস সালাম ও শাহীন আলমসহ অনেকেই টাকা পাননি। একইভাবে ৭নং ওয়ার্ডের শ্রমিকদের বাদ দিয়ে ৬নং ও ৯নং ওয়ার্ডের শ্রমিকদের নামের তালিকা করে কৌশলে টাকা আত্মসাৎ করেছেন মেম্বর নিজামউদ্দিন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পূর্ব নারায়ণপুর দারুস সালাম হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ আতাউল্লাহ নিজেকে একই সাথে দু’টি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করা ও নারায়ণপুর মসজিদের ইমামতি করার কথা স্বীকার করে বলেন, তাদের ১৮টি ছেলের নাম দেখিয়ে মেম্বর নাজিমউদ্দিন নয় হাজার টাকা দিয়েছেন। তবে সেটি কিসের টাকা তা তাদেরকে জানানো হয়নি।
ভাড়াসিমলা ইউপি সদস্য নিজামউদ্দিন বলেন, মাদ্রাসা ও মসজিদ সংস্কারের সুবিধার্থে নিয়ম ভঙ্গ করে ১৮ জন ছাত্রের বাবার মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে নয় হাজার টাকা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। যেদিন টাকা দেওয়া হয়েছিল ওই দিন ১৬ জন না আসায় এবং রায়হান ও শহীদুলের নাম দু’ বার আসায় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অতিরিক্ত ৭০/৮০ জনের মধ্যে ১৮ জনকে নয় হাজার টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তাছাড়া তিনি নদীর চরে বাস করেন দাবি করে বলেন, ঝড়ে তারসহ ৬০/৬৫ জনের ক্ষতি হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোটসহ কয়েকজনের সাথে আলোচনার একপর্যায়ে এক একটি বাড়ির চারজনের নাম তালিকায় দেওয়ার কথা হয়। সে অনুযায়ি তার বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে চারজনের নাম রয়েছে। তবে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম